ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ১১ রোহিঙ্গা সন্দ্বীপে আটক

প্রকাশিত: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ , মে ১৮, ২০২১

ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ১১ জন রোহিঙ্গাকে সন্দ্বীপ উপকূলে আটক করেছে স্থানীয় জনগণ। মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে সন্দ্বীপের পশ্চিমাংশের মেঘনা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে রহমতপুর উপকূলে পৌঁছলে স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে খবর পেয়ে উৎসুক জনতা তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। 

আটক রোহিঙ্গাদের মধ্যে একজন দালাল ছাড়াও এক পরিবারেরই ৯ জন সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ শিশু, ৬ মহিলা। এছাড়া তাদের সঙ্গে এক যুবকও রয়েছে।

এরা হচ্ছে, ইয়াছিন আরাফাত (দালাল-২৪) পিতা মৃত. আবদুল মন্নান, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প, সে পেশায় কাপড়ের ব্যাবসায়ী, ওমর ফারুক (২২) পিতা হোসাইন আহম্মদ, ভাসানচর ক্যাম্প, মোহছেনা বেগম(২৫) স্বামী জুবায়ের, মালয়েশিয়া প্রবাসী তার তিন সন্তান, মফিজুর রহমান (৯), হোসনে আরা(৮), হাফিজুর রহমান(৭), দিল কায়স (৩০), মোফায়দা(১৫), রহিমা খাতুন(৫০), নুর হাবা(২৩) বিবাহিত মহিলাদের স্বামী ও আত্মীয়-স্বজনরা কেউ মালয়েশিয়া থাকে, কেউবা কক্সবাজারের বালুখালী ক্যাম্পে থাকে।

আটক ইয়াছিন আরাফাত (২৫) নামের দালালের সঙ্গে ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদেরকে কক্সবাজারে পৌঁছে দেয়ার চুক্তি হয়েছিল। গত এক বছর আগে কুতুপালং থেকে ভাসানচর ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয় এই শরনার্থীদের।

দালাল ইয়াছিন আরাফাত জানায়, ভাসানচরের নিরাপত্তা দেয়াল ডিঙ্গিয়ে সেখানকার অন্য এক দালালের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে গভীর রাতে তাদেরকে ক্যাম্প থেকে বের করে আনা হয় তাদের। ভোর ৪টার দিকে তারা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ২০১২ সালে বার্মা থেকে শরনার্থী হিসেবে আসে এ দালাল।

আগত রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এরা ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে দালালের মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে জেলে নৌকা যোগে সন্দ্বীপ উপকূলে পালিয়ে আসে। তারা সন্দ্বীপ হয়ে কক্সবাজারের বালুখালী ক্যাম্পে ফেরত যাওয়ার উদ্দেশে ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসে।

আটক রোহিঙ্গা মোহছানা (২৫) জানান, বার্মা সেনাদের অত্যাচারের ভয়ে দেড়বছর আগে তারা মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে চেয়েছিল। সেখানে তার স্বামী ও অন্য আত্নীয়রা চাকরি করেন। কিন্তু সাগরে নৌ-বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর তাদের কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়া হয়।

আটক রহিমা খাতুন এই প্রতিবেদককে বলেন, ভাসানচর ক্যাম্প তাদের ভালো লাগে না তাই তারা পালিয়ে এসেছেন। স্থানীয় জনতা তাদের ধরে এনে রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে রাখে।

সন্দ্বীপ কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তারা ভাসানচর নৌবাহিনী কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেছেন। তারা বলেছেন আটক রোহিঙ্গাদের সন্দ্বীপ থানায় হস্তান্তর করার জন্য। সন্দ্বীপ থানার মাধ্যমে পুনরায় তাদের ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হবে।

সন্দ্বীপ থানা পুলিশের এসআই সোহেল জানান, মূলত এরা অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যেতে কক্সবাজার যাচ্ছিল। তাদেরকে ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা সন্দ্বীপ আজিমপুরে একজন এবং তার কয়েকদিনের মধ্যে মাইটভাঙ্গা এলাকা থেকে আরও তিনজন রোহিঙ্গাকে স্থানীয় জনতা আটক করেছিলো। তাদেরও সন্দ্বীপ থানা পুলিশের মাধ্যমে ভাসানচর ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

Loading