লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে সংক্রমণের সঙ্গে প্রাণহানি আরও বেড়েছে। টানা তিনদিন ঊর্ধ্বমুখী প্রাণহানির হার এবার হাজার ছাড়িয়েছে। এতে করে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজারের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় ৬৯ হাজার মানুষ। যদিও সুস্থতা লাভ করেছেন দুই-তৃতীয়াংশ রোগী। 

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের নিয়মিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮ হাজার ৮৩২ জন মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭১ লাখ ১১ হাজার ৫২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৫৪ জন। এতে করে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৭৬ জনে ঠেকেছে।

অপরদিকে, এখন পর্যন্ত সেখানে করোনামুক্ত হয়েছেন ৬১ লাখ ৭৭ হাজার ৭০২ জন রোগী। এর মধ্যে গত একদিনেই সুস্থতা লাভ করেছেন ৪৫ হাজার ১৯ জন।

চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সাও পাওলো শহরে ৬১ বছর বয়সী ইতালি ফেরত এক জনের শরীরে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই অবস্থা ক্রমেই সংকটাপন্ন হতে থাকে। যেখানে আক্রান্ত ও প্রাণহানির তালিকায় অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।

তবে শুধু ব্রাজিলই নয়, করোনার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোতেও। যেখানে পূর্বের তুলনায় ভাইরাসটির দাপট অনেকটা বেড়েছে। এমন অবস্থায় করোনাকে বাগে আনতে দেশগুলোর সরকার মানুষকে ঘরে রাখতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু অর্থনীতির চাকা সচল থাকা নিয়ে রয়েছে যত দুশ্চিন্তা। ফলে সংকটাবস্থার মধ্য দিয়ে ব্রাজিল, পেরু, চিলি, ইকুয়েডর ও আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোতে অনেক কিছুই চালু রয়েছে।

এর মধ্যে ব্রাজিলে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। দেশটিতে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে। অপরদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বিতীয় দফায় করোনা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর ব্রাজিল ভাইরাসটির প্রধানকেন্দ্রে পরিণত হয়। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোতে দ্রুত বিস্তার লাভ করায় কলম্বিয়া, পেরু ও আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোর প্রত্যেকটিতে আক্রান্ত ৯ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

এর মধ্যে আর্জেন্টিনায় সংক্রমিতের সংখ্যা ১৫ লাখ বেড়ে ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪১ হাজার ৫৩৪ জনের।

কলম্বিয়ায় করোনাক্রান্ত রোগী আজ ১৪ লাখ ৬৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ হাজার ৭৮৭ জনের।

পেরুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ লাখ ৯১ হাজারের বেশি। যেখানে মৃতের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৯০১ জনে ঠেকেছে।

এছাড়া চিলিতে সংক্রমিত ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৭৩২ জন মানুষ। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৭ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা।