কুমিল্লায় মাদক কারবারির হাতে স্ত্রীকে তুলে দেওয়ার ঘটনায় ৪ জন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১১:৩৯ অপরাহ্ণ , এপ্রিল ২০, ২০২৪

কুমিল্লার বরুড়ায় মাদকের বকেয়া টাকা দিতে না পারায় চাপের মুখে স্ত্রীকে মাদক কারবারির হাতে তুলে দিলেন আবুল খায়ের নামের এক স্বামী। পরে মাদক কারবারি ওই গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণের পর পুনরায় একটি ফসলি জমির মেশিন ঘরে নিয়ে পালাক্রমে আবারও তিনজন মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর শুক্রবার রাতে বরুড়া থানায় ভিকটিম ওই নারীর বাবা মামলা দায়ের করার পর পুলিশ তিন ধর্ষকসহ তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে। ভিকটিম ওই নারীর বাবার বাড়ি জেলার মুরাদনগর উপজেলায়। আজ শনিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বরুড়া উপজেলার শাকপুর গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে মো. নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরা (৩০), একই গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মনির হোসেন (২২), নরিন্দ্রপুর গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে মহিন উদ্দিন (৩৮) এবং ওই নারীর স্বামী আবুল খায়ের (২৬)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত সোমবার দিবাগত গভীর রাতে মাদক কারবারি নুরুলইসলামকে ওই গৃহবধূর স্বামী আবুল খায়ের তার শাকপুরের বাড়িতে ডেকে নেন।

মাদকের টাকা দিতে না পেরে কৌশলে তার স্ত্রীকে নুরুল ইসলামের কক্ষে পাঠালে সেখানে তাকে সেখানে ধর্ষণ করা হয়। পরে ভোর রাতে স্বামীর সহযোগিতায় ওই গৃহবধূকে নুরুল ইসলাম একই গ্রামের তার বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করে। পরদিন মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে নুরুল ইসলাম তার ঘরে ভিকটিম ওই নারীর স্বামীর সহায়তায় আবারও তাকে ধর্ষণ করে।

গত বুধবার রাত ৯টার দিকে ওই গৃহবধূর স্বামী আবুল খায়ের কৌশলে তারস্ত্রীকে গ্রেপ্তার তিন আসামির হাতে তুলে দেয়। এ সময় আসামি মহিন উদ্দিন তার সিএনজি দিয়ে ওই নারীকে আদ্রা ইউনিয়নের নরিন্দ্রপুর এলাকার জমিতে সেচ দেওয়ার মেশিন ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ১০টার পর তিনজন মিলে দলবদ্ধ ধর্ষণ
করে। পরে তাকে একই সিএনজি দিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শাকপুর নতুন বাজারে
নিকট কালর্ভাটের উপর ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

ভুক্তভোগী ওই নারীর চাচা আলা উদ্দিন বলেন, ‘৬ বছর আগে আমার ভাতিজির বিয়ে হয়। ভাতিজি জামাই একজন মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য তার ভাতিজিকে মাদক কারবারির কাছে তুলে দেয় তার স্বামী। একজন স্বামী কীভাবে এমন ঘৃণ্য কাজ করতে পারলো? আমরা মুরাদনগর থানা পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে থানায় এসে মামলা করি। আমরা তার স্বামী ও ধর্ষকদের বিচার দাবি করছি।’

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী জানান, মাদকের নেশা মানুষকে এতোটা বিপথগামী করতে পারে ভুক্তভোগী এ নারীর প্রতি এমন নিষ্ঠুরতাই তা প্রমাণ করে। অভিযোগ পেয়ে ঘটনায় জড়িত ওই নারীর স্বামীসহ অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আজ শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দির জন্য নির্যাতিত ওই নারীকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার মাদক কারবারি নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

Loading