পরিবেশ নিয়ে কবি চপল মাহমুদের ছয়টি কবিতা নিউজ৭১অনলাইন,ঢাকা নিউজ৭১অনলাইন,ঢাকা প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ , জুন ১০, ২০২০ ১. নিরব আগ্রাসন সবুজ বনে জাল বুনেছে ধূসর সবুজ প্রকৃতির চারপাশে প্রাণহীন শূন্যতা ফুল ফল পাখি সব উধাও নেই মায়া মাখা ছায়া চলছে নিরব আগ্রাসন। জমে উঠেছে বিপন্নতার মহা উৎসব শিকড় গেড়ে দাড়িয়ে ইউক্যালিপটাস বন। প্রকৃতির প্রাণে বিষ ঢুকছে মানব হাতে বাঁচার জন্য মরণ ফাঁদে দিচ্ছে পাঁ একসঙ্গে। অল্প জমি অধিক ফসল কম সময়ে বেশি ফলন বারছে আকার কমছে স্বাদ প্রকৃতির চারদ্বারে জমে উঠছে শুধুই বিস্বাদ থেকে থেকে তাই বিরূপ আচরণ. চলছে নিরব আগ্রাসন। ২. পরম বন্ধু পরম বন্ধু আমার জীবনের পরতে পরতে জেগে থাক মহাযুদ্ধে চলার পথে তোকে পাই বন্ধু তোকে ভাঙ্গিয়ে খাই দেখি পড়ি তোকে শুনতে পাই মুছি আবার আঁকি আমার আগামীর ভাবনায় বন্ধু তোকে সাজাই লুকাই হাসি হাসাই হারাই খুঁজি বারবার তোকে নিয়ে খেলি আলো আধার বন্ধু তোকে ভাঙি গড়ি তোর বুকে জন্মই মরি তোকে নিয়ে কাটাই বর্তমান বয়ে যাই আগামীর প্রাণে ভব প্রকৃতি পরম বন্ধু আমার তবুও তোকে কাঁদাই। ৩. ঋণী আমি নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে ঋণী প্রকৃতির কাছে ছুটি ক্ষণে ক্ষণে প্রাণপণে বাঁচার যুদ্ধে জীবন তালিকায় শত চাহিদায় জাগি দিবা রাত কত প্রয়োজন মেখে জীবন আগামী চলায় চাই অক্সিজেন অন্ন বস্ত্র বাসস্থান চাই আরও কত কত কি আমার বেঁচে থাকা প্রকৃতির অকৃপন অবদান তাই গাছ লাগাই ঋণ কমাই বাচাই পরিবেশ প্রাণ বৈচিত্রের খেলায় সুখ সমৃদ্ধি মেখে সুস্থ থাকি বার মাস প্রকৃতির মাঝে নিজেকে ভালবেসে। আমি নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে ঋণী প্রকৃতির কাছে। ৪. নিরব দর্শক আমি এক নিরব দর্শক বুঝেও বুঝিনা বুঝতেও চাই না আমি চোখ থাকতে দেখিনা কান থাকতে শোনিনা মুখ থাকতেও বলিনা কিছু। বিবেক আমায় করেনা দংশন পরাধীনতার পালঙ্কে ঘুমিয়ে আছে বোধ আমি বাক্সে বন্দি চাকর বাক্সে খুঁজি দুনিয়া প্রতিদিন বদলাই রুচিবোধ আমি রক্তে মাংসে রোবট জাত ভাললাগে ক্যামিকেল খুঁজি না প্রকৃতির স্বাদ আমি ডাঙায় পাঁ রাখিনা উচ্চে করি বসবাস আমার ঘুম ভাঙ্গেনা পাখির ডাকে দেখা হয়না ভোর প্রকৃতি সে তো এখন অনেক দূর আমি আর এখন চাষা নই খাই পিৎজা বার্গার কোলড্রিংস খুঁজি না মিষ্টি দই. আমি নিচিন্তে সন্তানের হাতে তুলে দিতে পারি ফরমালিনের বিষ নির্বিঘ্নে গ্রাস করতে পারি প্রজন্মের অধিকার উপহার দিতে পারি প্রাণহীন ধূসর আগামি. আমি সচেতনভাবে অজ্ঞানতার মোড়কে বিপন্নতার আত্মচিৎকার সইতে পারি নিরবে. আমি প্রকৃতির বৈরিতায় হইনা প্রভাবিত সচেতনতার গায়ে দোষ চাপিয়ে সাড়ি দায়িত্ব. আমি ভুলে গেছি জননী জন্মভূমি দেশপ্রেম আমি খুঁজি না ভালবাসা বুঝিনা আবেগ ও সব তো এখন শুধুই সাবেক..। ৫. বিপন্নতার চিৎকার হে মানব কোথায় তোমার মানবতা..? আমারও তো আছে পৃথিবীর বুকে বাঁচার অধিকার. তবে কেন আজ আমি বিপন্ন..? বিলুপ্তের দ্বার প্রান্তে দাড়িয়ে বেহাল আমার বর্তমান বেহাল টিকে থাকা পৃথিবীর সবখানে কোণে কোণে দখল নিধন দূষণে আজ আমি ক্লান্ত বাঁচার যুদ্ধে। এর জন্য দোষ আমি তোমায় দেব তুমি না শ্রেষ্ঠ জগৎ সম্রাট প্রজ্ঞাবান কোথায় তোমার বিবেক..? এ কেমন আচরণ কেন এই বর্বরতা..? তুমি কি শুনতে পাওনা প্রকৃতির চারপাশের বিপন্নতার চিৎকার..? এখনো বুঝে উঠতে পারনি আগামীর ভয়াবহতা..? বুঝবে বুঝবে সব হারিয়ে সে দিন খুব বেশি দূরে নয় আমার মত তোমাকেও গ্রাস করবে বিপন্নতা এখনও সময় আছে ছাড় স্বার্থপরতা..। হে মানব কোথায় তোমার মানবতা..? ৬. অবাক কবি সুন্দরবনে বাঘ নেই খেলার মাঠে বাঘ এমন দৃশ্যে কবি রীতিমত অবাক..! নিরবে কাঁদে বন আগ্রাসনে বিপন্নতা ছড়িয়ে গেছে সব প্রাণে. দুর্যোগ দূষণের দংশনে বন তার উপর আবার অগ্নিসংযোগ হত্যা নিধন. কমতে কমতে একশো ছয় সুন্দরবন রক্ষায় বাড়লো ভয়. থাকবেনা যেদিন বাঘের ডাক ধ্বংস লীলায় বন হবে নির্বাক. সব হারিয়ে অন্য সব বনের মতই সুন্দরবনও হবে টাক..। এমন দৃশ্যে কবি ভীষণ অবাক.! শেয়ার শিল্প-সাহিত্য বিষয়: https://news71online.com/?p=3427&preview=truehttps://news71online.com/archives/3427