আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রদীপকান্ডের পর মামলার হিড়িক

প্রকাশিত: ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ , আগস্ট ২৮, ২০২০

কক্সবাজারের টেকনাফে প্রদীপকান্ডের পর আদালতে যাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একের পর মামলা হচ্ছে। এসব মামলার অভিযোগে বের হয়ে আসছে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি, ঘুষ, দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আইনজীবীরা বলছেন, এ ধরনের মামলার নিরপেক্ষ তদন্তে দোষীদের চিহ্নিত করে পুলিশ বাহিনীর ইমেজ বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলী কারাগারে যাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হচ্ছে। ওই দুজনের অপকর্মের শুরুটা হয় চট্টগ্রাম মহানগরীতে। চট্টগ্রামে যাদের উপর জুলুম করেছেন তারাও প্রতিকার চাইতে শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগে মামলা হচ্ছে।

গত কয়েক দিনে চট্টগ্রামে এমন চারটি মামলা হয়। সর্বশেষ বুধবার লিয়াকত আলীসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ও পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মামলাটি করেন। আদালত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে ডিবির উপ-কমিশনারকে নির্দেশ দেন।

ঘরে ঢুকে টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়া এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে রোববার রাউজানের সদ্য বদলি হওয়া ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ করা হয়। কুÐেশ্বরীর কাঞ্চন চৌধুরীর অভিযোগের বিচারিক তদন্ত চলছে আদালতে। জমি নিয়ে আত্মীয়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে বিরোধী পক্ষের টাকা খেয়ে পুলিশ এ ঘটনা ঘটায় বলে বাদীর অভিযোগ। ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও গণপিটুনির একটি মামলায় আসামি করে তাকে চালানা দেওয়া হয়।
১৯ আগস্ট আট লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার অভিযোগে বায়েজিদ থানার ওসি তদন্তসহ আট পুলিশের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা হয়। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. আবদুল ওয়াহেদের মামলাটি সিএমপির উত্তর জোনের উপ-কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তার আগে ১৬ আগস্ট পটিয়া আদালতে প্রবাসী মো. জাফরকে তুলে নিয়ে ৫০ লাখ টাকার দাবিতে হত্যার অভিযোগে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান ও এসআই আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মেজর (অব.) সিনহা হত্যার রাতেই জাফরসহ দুই জনকে ক্রসফায়ারে দেয়া হয় চকরিয়ায়।

পুলিশি অভিযানে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুতে ডবলমুরিং থানার এসআই হেলাল খানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আট লাখ টাকা না পেয়ে চন্দনাইশ থেকে দুই ভাই ফারুক ও আজাদকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগে ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ জয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা প্রসঙ্গে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম বলেন, যে কেউ আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। প্রতিটি মামলা আদালতের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে মামলা চলবে একই সাথে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগে একের পর মামলায় পুলিশের ইমেজ কিছুটা হলেও ¤øান হচ্ছে। তবে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে ইমেজ পুনরুদ্ধারের সুযোগও রয়েছে। করোনাকালে যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে পুলিশ বাহিনীর ইমেজ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের এসব অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষতা দেখাতে পারলে পুলিশের সুনাম আরো বাড়বে। কিছু ব্যক্তির দায় পুরো বাহিনী নিতে পারে না। ইনকিলাব

Loading