গাজায় নিহত ছাড়াল ৮ হাজার

প্রকাশিত: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ , অক্টোবর ২৯, ২০২৩

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এ খবর দিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন আজ ২৩তম দিনে গড়িয়েছে। ওই দিন ভোরে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলে হামলা চালানোর পর গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।

এদিকে ইসরাইল জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করেছি। এ পর্যায়ে আমাদের লক্ষ্য হলো হামাস ও তাদের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা। সেই সঙ্গে জিম্মিদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনা।

গাজায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এতে বিপর্যয় সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে, যা কয়েক দশক ধরে স্থায়ী হতে পারে। একই সঙ্গে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অব্যাহত বোমা হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।

শনিবার বেলারুশের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বেলটাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন লাভরভ। ইসরাইলের বিরুদ্ধে রাশিয়ার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে লাভরভের মন্তব্যকে।

তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানাই। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে সন্ত্রাসবাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করি। বেসামরিক নাগরিক, জিম্মি লোকজন রয়েছে জানার পরও নির্বিচার বলপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন।

রাশিয়ার এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরাইল যেভাবে হামাসকে ধ্বংস করতে চায়, সেভাবে ধ্বংস করা অসম্ভব। সতর্ক করে দিয়ে লাভরভ বলেন, ‘যদি গাজাকে ধ্বংস এবং এর ২০ লাখ বাসিন্দাকে বহিষ্কার করা হয়, যেভাবে ইসরাইল ও বিদেশি কিছু রাজনীতিবিদ প্রস্তাব দিয়েছেন, তা শতাব্দীকালের জন্য না হলেও বহু দশকের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।’

‘অবরোধের মধ্যে থাকা জনগণকে বাঁচানোর জন্য অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সেখানে মানবিক কর্মসূচি ঘোষণা করা দরকার।’

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারীগোষ্ঠী হামাসের ইসরাইলে আকস্মিক হামলার পাল্টায় গাজাজুড়ে বোমা হামলা শুরু করে ইসরাইল। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে ইসরাইলের হামলায় ৮ হাজার জনের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।

যুদ্ধ শুরুর পর পরই সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিয়ে গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানির সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। আর ইসরাইলে হামাসের হামলায় মারা গেছেন অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন। ইসরাইলের টানা হামলার কারণে গাজার প্রায় ১৪ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। চলমান যুদ্ধের মাঝে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল মস্কো সফর করেছে। হামাস নেতাদের মস্কো সফরের ঘটনা নিয়ে রাশিয়ার প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইসরাইল। মস্কো সফরে যাওয়া হামাস নেতারা বলেছেন, তারা রাশিয়ার অনুরোধে গাজায় জিম্মি হয়ে পড়া ৮ রুশ নাগরিককে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ জন্য জিম্মি রুশ নাগরিকদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করছেন তারা।

সূত্র: রয়টার্স, আরটি

Loading