আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস

প্রকাশিত: ১:০৮ অপরাহ্ণ , আগস্ট ৯, ২০২৩

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস আজ। ১৯৯৪ সাল থেকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী ৯ আগস্টকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

বিশ্বের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা এবং তাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও চর্চাকে অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘ এই দিবস পালন করে থাকে। প্রতি বছর দিবসটি পালন করার জন্য একটি প্রতিপাদ্য বেছে নেওয়া হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, ‘আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরুণেরাই মূল শক্তি’।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রাজধানীতে সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র রোধিপ্রিয় লারমা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, সম্প্রদায় বা উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে এসব গোষ্ঠীগুলোর অনেকেই নিজেদের আদিবাসী হিসেবে দাবি করেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার না করে বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা নৃগোষ্ঠী শব্দ ব্যবহার করতে।

বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন ছোট ছোট সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীকে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা নৃগোষ্ঠী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ অবস্থায় ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত টক শোতে অংশগ্রহণকারী সরকারের নীতিনির্ধারক, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের সম্পাদকসহ সুশীল সমাজের অন্য ব্যক্তিদের ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বিষয়ে সচেতন থাকার কথা বলা হয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে।

আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার না করতে উচ্চ আদালতেরও নির্দেশনা রয়েছে।

বাংলাদেশে বাংলা ছাড়াও ৪০টি ভাষা রয়েছে, যার প্রায় সবই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। তবে এসব ভাষার অধিকাংশই এখন বিলুপ্তির পথে। কার্যকর ব্যবহার ও উদ্যোগ না থাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন গবেষকেরা। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার স্বার্থে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা-সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন।

Loading