অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ১১:৫৭ অপরাহ্ণ , জুলাই ২৬, ২০২৩

দল ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ও পার্টির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও একটি মহল কর্তৃক কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং শাস্তির দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সম্পত্তি দখল করে কার্যালয় স্থাপনের অভিযোগকে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, কাল্পনিক, ভিত্তিহীন ও কুরুচিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়।

বিএসপির অতিরিক্ত মহাসচিব মুফতি বাকী বিল্লাহ আল আজহারি বলেন, ‘অভিযোগকারীরা আগামী ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বিএসপি।’

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বাকী বিল্লাহ আল আজহারি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে বিএসপির বিরুদ্ধে অভিযোগে দাবি করা হয়েছে যে, বিএসপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহ অভিযোগকারীদের পৈতৃক সম্পত্তিতে অবস্থিত। যাহা সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বিএসপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে অবস্থিত কোনো কার্যালয়ই অভিযোগকারীদের এজমালি কিংবা পৈতৃক সম্পত্তিতে অবস্থিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ছয় ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে তাঁদের দাখিলকৃত মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহারপূর্বক মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে মৌখিক ও লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। অন্যথায় বিএসপি দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএসপি চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারির বিরুদ্ধে পারিবারিক সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে খানকা শরীফ দখল করে রাজনৈতিক কার্যালয় স্থাপনের অভিযোগ করেন তাঁর ছোট ভাই সৈয়দ সহিদ উদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারি ও তাঁর দুই বোন।

খানকা দখল করে বিএসপির কার্যালয়, সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে ভাই-বোনদের অভিযোগ ইসিতে
চেয়ারম্যানের পরিবারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন কি না, জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে দলের দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘সৈয়দ সহিদ উদ্দিনসহ নির্বাচন কমিশনে যাঁরা অভিযোগ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আমরা গতকাল শনিবার সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলাম। সেটা শেষ হয়ে গেছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মতের সঙ্গে অমত থাকতেই পারে। সমালোচনা সবাই করতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা তথ্য সংবলিত চিঠি দিয়ে নিবন্ধন বাতিলের দাবি গুরুতর অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন পাঁচবার তদন্ত করেছে। এসব অভিযোগ করে তো নির্বাচন কমিশনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে দলটি বর্তমান সংবিধানের আলোকে নির্বাচন চায় জানিয়ে ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামে কোনো সরকার আছে কি না, আমার জানা নেই। ভারত, আমেরিকায় যে নির্বাচন হয়, সেটা তাদের নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়। সেই সিস্টেমে কি আমাদের দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না? অবশ্যই পারে। বর্তমানে অনেকেই এই দাবি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) করছে, আমি মনে করি, এটা সংবিধানের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। তাই সংবিধানের বাইরে কোনো কথা বলতে চাই না।’

তবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে দলের অবস্থান জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান নেতৃবৃন্দ। ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আজকের সংবাদ সম্মেলনের বিষয় এটি নয়। বিষয়ের মধ্যে থেকে প্রশ্ন করলে ভালো হয়।’

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘সুফিবাদ কখনো ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দেয় না। আমরা সুফিবাদী দল, আমরা ঘুষ, দুর্নীতি, অপকর্মের বিরুদ্ধে অতীতেও ছিলাম, বর্তমানেও আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।’

Loading