ভুট্টার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশিত: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ , মে ৮, ২০২৩

শেরপুরের নকলায় এবার চলতি রবি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেদের কম খরচে বাম্পার ফলনে লাভবান হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে ওঠেছে। এছাড়া ভালো ফলন দেখে আশেপাশের কৃষকরা এখন ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

জেলা খামারবাড়ি সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে নকলা উপজেলায় বোরো ধান আবাদ কমলেও এর বিপরীতে ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। চলতি রবি মৌসুমে নকলা উপজেলায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এর বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ভুট্টা। ভুট্টা আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৫০০ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে ২ কেজি করে ভুট্টা বীজ এবং ২০ কেজি করে ডিএপি ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। উপজেলার পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নেই কমবেশি ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। এখন বিভিন্ন ক্ষেতে উৎপন্ন ভুট্টা ফসল কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।

শনিবার দুপুরে উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দুপাশে অনেক জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেতেই ভুট্টার থোর এসে গেছে। কয়েকটি ক্ষেতে ভুট্টা পেকেও গেছে। আর কয়েকজন কৃষক ক্ষেত থেকে পাকা ভুট্টা তুলছেন। ওইসময় বন্দটেকি গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনি এবার প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। এ জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। গম ও বোরো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে পানি কম লাগে। এতে খরচও কম হয়। এবার ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে।

তিনি ইতিমধ্যে ১০ শতাংশ জমির ভুট্টা কেটেছেন। ফলন পেয়েছেন প্রায় ১০ মণ। বর্তমানে কাঁচা ভুট্টার দাম প্রতি মণ ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। পুরো জমির ভুট্টা কাটা শেষে তার ভালো লাভ হবে। বন্দটেকি গ্রামের মোর্শেদ আলম বলেন, প্রায় এক একর জমিতে তিনি ভুট্টার আবাদ করেছেন। খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও রাসায়নিক সার দিয়েছে। প্রতি শতাংশে এক মণ ভুট্টা উৎপাদিত হবে। আশা করছেন ভুট্টা বিক্রি করে তিনি লাভবান হবেন।

এ ব্যাপারে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ভুট্টা স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদনকারী ফসল হিসেবে পরিচিত। দেশে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি পোলট্রি, ডেইরি ও ফিশফিড হিসেবেও এর চাহিদা প্রচুর।

এছাড়া দেশের মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত চাল ও গমের ওপর চাপ কমাতেও সরকার অধিক হারে ভুট্টা চাষের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। কৃষি বিভাগের প্রণোদনা পেয়ে এবার নকলায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে অধিক উদ্বুদ্ধ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও বাম্পার হয়েছে। এতে আগামীতে এ এলাকায় ভুট্টা চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

Loading