মেট্রোরেল

সুপারিশেই আটকে আছে বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট

প্রকাশিত: ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ , জানুয়ারি ২৮, ২০২৩

মেট্রোরেলের জন্য পুলিশের আলাদা একটি ইউনিট গঠনের সংবাদ বেশ আগের। প্রস্তাবিত এই ইউনিটে থাকবে ৩৫৭ জন পুলিশ সদস্য। তারা যাত্রীসহ পুরো মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করবেন। মেট্রোরেল চালু হওয়ার প্রায় এক মাস পার হলেও বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট গঠন এখনও সুপারিশ পর্যায়েই রয়েছে।
জানা গেছে, পুলিশের পক্ষ থেকে হাজারের বেশি সদস্য চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তবে সেই প্রস্তাব কাটছাট করে ৩৫৭ জনের বিষয়টি চ‚ড়ান্ত হতে যাচ্ছে। বর্তমানে যাত্রীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ডিএমপির থানার অধীনে কাজ করছেন। সেখান থেকে তাদের ডিউটি ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় অপরাধী ধরলে তা সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় সোপর্দ করা হবে। মেট্রোলের জন্য আলাদা পুলিশ বাহিনী গঠন করা হলে আলাদা থানাও গঠন করা হতে পারে বলে জনা গেছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, এই ইউনিটে একজন উপ-মহাপরিদর্শক, একজন অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক, একজন পুলিশ সুপার, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৭ জন নিরস্ত্র ইন্সপেক্টর, একজন সশস্ত্র ইন্সপেক্টর, ৬ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৫১ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ১০ জন নায়েক, ২৭০ জন কনস্টেবল থাকবে। পাশাপাশি তাদের সাহায্য করার জন্য একজন হিসাবরক্ষক, একজন উপ-সহকারী হিসাবরক্ষক ও একজন কম্পিউটার অপারেটরসহ মোট ৩৫৭ জনের একটি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। শিগগির এটি চ‚ড়ান্ত করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের এসব সদস্য ট্রেনের সার্বিক নিরাপত্তা ছাড়াও স্থাপনার নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও যাত্রী সুরক্ষায় কাজ করবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকবে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান। এসবের নিরাপত্তায়ও তারা কাজ করবে। তবে প্রতিটি স্টেশনের আলাদা পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাবও করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ওঅ্যান্ডএম) ফারুক আহমেদ বলেন, আমরা হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই-বাছাই হয়ে তা ৩৫৭ করা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবে ১ হাজার ৩৯ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এ ইউনিটের সদস্যদের জন্য থাকবে আলাদা ইউনিফর্ম। তবে ইউনিফর্ম এখনো চ‚ড়ান্ত হয়নি।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেলের জন্য বিশেষায়িত পুলিশ গঠন করা কথা ছিল, কিন্তু এখনও তা বৈঠক আর সুপারিশ পর্যায়েই আছে।
নিরাপত্তা ও কারিগরি কর্মকর্তাদের অভাবেই কি সব স্টেশন একবারে চালু করা হয়নি, এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, লোকবলের কোনো ঘাটতি নেই। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত ২৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে মেট্রোরেলের যুগে পা দেয় বাংলাদেশ। দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষে এদিন মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলের প্রথম যাত্রীও ছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শুধু উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলা শুরু করে মেট্রোরেল। তবে পরবর্তীতে সময় এক ঘণ্টা বেড়েছে। আর গত বুধবার উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের পর পল্লবী স্টেশনও চালু হয়েছে।
২০১২ সালে নেয়া মেট্রোরেল প্রকল্প এক দশক পর আংশিক চালু হলো। এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত প্রকল্পটির উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে ১৭টি স্টেশন থাকছে। মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। ### ইনকিলাব

 

Loading