চা শ্রমিকদের শেষ ভরসা শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ , আগস্ট ২৭, ২০২২

মজুরি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও চা বাগান মালিকদের মধ্যে গণবভনে শনিবার বৈঠকের কথা রয়েছে। এ বৈঠকে কী আলোচনা হয়, সেদিকেই নজর রাখছেন আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা।

শুক্রবারও কোনো শ্রমিক বাগানের কাজে যাননি; তারা বাগানে বাগানে বৈঠক ও আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।

চা বাগানের শ্রমিক অনিল বলেন, “আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে আছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানেন। আমরা পৌনে ২০০ বছর ধরে যে জায়গায় বসবাস করছি সে জায়গার ভূমি অধিকার আজও আমরা পাইনি। সব বাগানে এখনও স্কুল হয়নি। আশা করি, দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব সমস্যারও সমাধান হবে।”দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের ১৬৭ চা বাগানের সোয়া লাখের বেশি শ্রমিক। ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন তারা।

২০ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর ১৪৫ টাকা দৈনিক মজুরির প্রতিশ্রুতিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও তা মানেননি শ্রমিকরা। তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, শনিবার বিকাল ৪টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বাগান মালিকদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করবেন। এই বৈঠক নিয়ে চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে শুক্রবার দিনভর আলোচনা হয়। বৈঠক থেকে কী ফলাফল বা ঘোষণা আসে সেদিকে অনেকেরই নজর রয়েছে।

কালাপুর ইউনিয়নের ফুলছড়ি চা বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি লক্ষ্মণ বাউরি বলেন, “আমরা আন্দোলন করছি পেটের দায়ে। আমাদের যে মজুরি দেওয়া হয় তা থেকে বিদ্যুৎ বিল, রেশন, ভবিষ্যৎ তহবিল ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের চাঁদা সব কিছু কেটে নগদ হাজরি দাঁড়ায় ১০০ টাকারও কম। এই টাকা দিয়ে দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে হয়। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া, পোশাক, মাছ, সবজি, তেল, লবণ, ডাল সবই এ দিয়ে। এটা কী করে সম্ভব?”

স্বাধীনতার পর এক টাকা দুই আনা মজুরি পেতেন তারা। পরে সেটা বেড়ে দৈনিক পাঁচ টাকা হয়। এভাবে বাড়তে বাড়তে এখন চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা। দুর্মূল্যের বাজারে ওই টাকায় কীভাবে চলে? বছরজুড়েই অভাব-অনটন লেগে থাকে তাদের পরিবারে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের দুর্দশার কথা সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে উঠে এলেও আড়ালেই থেকে যায় চা শ্রমিকের মত অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কথা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া এই মানুষদের ধর্মঘটে সংহতি জানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন অনেকেই।

Loading