৯ মার্চ: ভাসানীর সমর্থন

প্রকাশিত: ১২:৩৩ অপরাহ্ণ , মার্চ ৯, ২০২২

এদিন সারা দেশ উত্তাল। বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনের কর্মসূচি মেনে সচিবালয়সহ সব সরকারি ও আধা সরকারি অফিস, হাই কোর্ট ও জেলা আদালতসহ সবখানে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বঙ্গবন্ধু যেসব সরকারি অফিস খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন, শুধু সেসব অফিস চালু থাকে।

এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মধ্যে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় এদিন।

ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে এক বিশাল জনসভায় বাঙালির স্বধীনতা আন্দলন ও বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন ভাসানী।

বিকেলে পল্টন ময়দানের ওই জনসভায় তুমুল করতালির মধ্যে তিনি বলেন, “ইয়াহিয়া সাহেব, অনেক হয়েছে, আর নয়। তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার নিয়মে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা মেনে নাও।”

ভাসানী সেদিন বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশমত আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কোনো কিছু না করা হলে আমি মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন শুরু করব।”

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনেই ঢাকা হাই কোর্টের কোনো বিচারক লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে গভর্নর হিসাবে শপথ পড়াতে অস্বীকার করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের এক জরুরি সভায় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নেতৃত্বে গঠিত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ এর ছাত্রসভায় গৃহীত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ছাত্রলীগ শেখ মুজিবের প্রতি অবিলম্বে জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান।

সকালে পাকিস্তান এয়ালাইন্সের (পিআইএ) বাঙালি কর্মচারীরা তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

অন্যদিকে সামরিক কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে রাজশাহী শহরে ৮ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

চট্টগ্রামে অবাঙালীরা রেলওয়ে কলোনি এবং এ কে খান রোডে সংঘর্ষে জড়ায় দুপুরের দিকে। বিকালে হালিশহর থেকে দেওয়ানহাট হয়ে আগ্রাবাদ পর্যন্ত অস্ত্র নিয়ে মিছিল করে অবাঙালীরা।

অন্যদিকে চট্টেশ্বরী রোডে ‘চট্টগ্রাম শিল্প-সাহিত্য পরিষদ’ এর অফিসে গণসংগীতের মহড়া শুরু হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট এদিন পূর্ব পাকিস্তান থেকে কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ঢাকায় উপ-আবাসিক প্রতিনিধিকে নির্দেশ দেন। জাপানের পররাষ্ট্র দপ্তর পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদেরও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

Loading