‘প্রস্তুতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে দুর্ঘটনার দায় কে নেবে?’

প্রকাশিত: ২:৪৯ অপরাহ্ণ , আগস্ট ৩০, ২০২১

চলতি সপ্তাহে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা খোলার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার। তার আগে অনেকগুলো যতি কিন্তু অপেক্ষ করছে। চিন্তার বিষয় করোনা সংক্রমণের হার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে। কমসে কম ৫ শতাংশে নেমে আসতে হবে সংক্রমণ। অথচ রোববার (৩০ আগস্ট) দেশে সংক্রমণের হার ছিল ১৪.১৪। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন।

একটি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অবশ্যই খোলা দরকার। কোভিডের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। যদিও এ সময়ে আমরা লেখাপড়া অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু তা কতটা কার্যকর ছিল, সেটা বিবেচনাসাপেক্ষ। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ভাবনাকে স্বাগত জানাই। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ইতিবাচক হচ্ছে, সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগে একবারের জায়গায় তিনবার ভাবছে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে তিনটি দিক অবশ্যই নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা। তার মতে এগুলো হচ্ছে, ‘পাঠদান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতা, সংশ্লিষ্ট সবাইকে টিকাদান এবং অভিভাবকদের আস্থা অর্জন।’

অভিভাবকদের আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে সরকার প্রশাসনের নেতৃত্বে টিম করে দিতে পারে। এ কমিটিতে অভিভাবক ও শিক্ষক থাকবেন মত দিয়ে তিনি বলেন, ‘কমিটির কাজ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত কি না, সেটা দেখার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন কাজ তদারকি। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও বড় ভূমিকা আছে। তারা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে পারে।’

রাশেদা কে চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এসব নিশ্চিত করা না হলে খোলার পর পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে একটি দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নেবে?’

সারাদেশেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক।

‘কয়েকদিন আগে মিরপুরের একটি বড় স্কুলে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে গিয়েছেন এক ছাত্র। সঙ্গে তার মা ছিলেন। ওই মা আমাকে জানিয়েছেন, স্কুলে ময়লা-আবর্জনায় ভরা। বেঞ্চিতে ধুলোর আস্তরণ। বাথরুমে গিয়ে ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই যদি হয় স্কুল খোলার প্রস্তুতি, তাহলে খোলার পর পরিস্থিতি আরও পীড়াদায়ক হবে। অভিভাবকরা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে নিরুৎসাহিত হবেন। আমি যতটা জেনেছি, মিরপুরের উল্লিখিত স্কুলের চিত্র প্রায় সারা দেশেই বিদ্যমান। সরকার ১৮ বছর পর্যন্ত সবাইকে টিকা দেওয়ার কথা বলছে। কেবল শিক্ষার্থীদের কথা বেশি বেশি আসছে। কিন্তু ১৩ লাখ শিক্ষকের সবাই টিকা দিল কিনা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিস্থিতি কী, সেটাও আলোচনায় সামনে আনা প্রয়োজন।’ যোগ করেন তিনি।

Loading