শোক দিবস উপলক্ষে “বঙ্গবন্ধু কাল থেকে কালান্তরে শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ৩:৩৪ অপরাহ্ণ , আগস্ট ১৯, ২০২১

১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু কাল থেকে কালান্তরে’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (১৮ আগস) রাত ৮টায় বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আবু সালেহ এর সঞ্চালনায় ও উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি অনলাইনে জুম প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গোপালগঞ্জ-০২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য জনাব শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মূল আলোচক হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও স্বাগত বক্তা হিসেবে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্যে ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতি তথা বিশ্ব মানবতার জন্য একটি কলংক জনক অধ্যায়। ঘাতকেরা জাতির পিতার হত্যার মাধ্যমে এ দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা হয়তো জানতনা যে বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।

অধ্যাপক ড এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রই উপহার দেননি, স্বল্প সময়ে ত্বরান্বিত করেছেন অর্থনৈতিক উন্নতি , ভারতের সাথে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি, ও দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর মহান দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধু যখন ক্ষত-বিক্ষত ও যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির জন্য সফলতার সাথে দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে অগ্রসর হচ্ছিল ঠিক তখনই ঘাতকের দল বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধকে হত্যা করার পটভূমি রচনা করে। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন করছে, ত্বরান্বিত করছে নারী ও গ্রামীণ মানুষের জীবন, বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়। আর বাঙ্গালি জাতির মুক্তির দূত, বঙ্গবন্ধু এই জন্যে কাল থেকে কালান্তরে প্রাসঙ্গিক।

অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই ৭ মার্চের উত্তাল গণসমুদ্র, ৭১ এর গর্জে উঠা হাতিয়ার। ঘাতকেরা গভীর ষড়যন্ত্র ও নীল নকশার মাধ্যমে বাংলা মাটিতে রচনা করে এক নির্মম কালো ইতিহাস। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় এদেশে বঙ্গবন্ধুর ৫ খুনিদের ফাঁসি হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেছে তাদের সবাইকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে, যারা এখনও পলাতক তাদের দ্রুতই দেশে এনে বিচার করতে হবে।

প্রধান অতিথি জনাব শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি তাঁর আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅঅভ্যুত্থান ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অতুলনীয়। বঙ্গবন্ধুর মত গণমানুষের নেতা সমগ্র বিশ্বে আর আসবে কিনা তা বলা কঠিন। হাজার বছর ধরে যে বাঙালি কখনো স্বাধীনতা পায়নি, বঙ্গবন্ধু তার অপরিসীম দেশপ্রেম ও ত্যাগের মাধ্যমে এনে দিয়েছে সেই কাংখিত স্বাধীনতা। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাঙালি কখনো স্বাধীন হত না। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে প্রতিবিপ্লবিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালন করেছে। যারা ১৫ আগস্টের পর ঘাতকের সাথে রেডিও স্টেশনে গিয়েছিল তারাও হত্যার সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, তার আদর্শ ধারণ করতে হবে কারণ বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শের মৃত্যু নেই। আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসরণ করে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারলেই বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।

অধ্যাপক ড. এ. কিউ এম মাহবুব বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চর্চা পৌছে দিতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু ও তার কর্মের ওপর বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণা। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণার কাজে এগিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য উক্ত আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি জনাব আবুল বাশার রিপন খলিফা, কোষাধ্যক্ষ জনাব মোঃ হাফিজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল আরেফিন, প্রচার সম্পাদক জনাব সাদ্দাম হোসেন, সদস্য ড. মোঃ রাশেদুজ্জামান পবিত্র, জনাব মাহবুব আলম, জনাব গাজী মোহাম্মদ মাহবুব, দিলরুবা আফরোজ পপি, জনাব মোঃ শরীফুজ্জামান, জনাব মাইদুল হোসেন, মোঃ নাসির উদ্দিন ও অভিজিৎ বিশ্বাস সংযুক্ত ছিলেন।

Loading