২৮ বছরের আক্ষেপ ঘুচলো আর্জেন্টিনার

প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ , জুলাই ১১, ২০২১

অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরই উল্লাসে মেতে উঠেন বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডেরর কৃতিত্বেই ২৮ বছরে শিরোপা খরা মিটলো আলবেসিলেস্তেদের। 

সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে বড় কোনও টুর্নামেন্টের ট্রফি জিতেছিল আর্জেন্টিনা। তাও এই কোপা আমেরিকারই। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার জোড়া গোলে মেক্সিকোর বিপক্ষে জয় নিয়ে শিরোপায় চুমু দিয়েছিল তারা। এবারের ফাইনালের নায়ক অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। প্যারিস সেন্ট জার্মেইর (পিএসজি) এই ফরোয়ার্ডের করা একমাত্র গোলই মারাকানায় ব্যবধান গড়ে দিয়েছে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ সময় রোববার (১১ জুলাই) সকাল ৬টায় রিও ডি জেনেরিওর এই মাঠে অনুষ্ঠিত উত্তেজনা ছড়ানো ফাইনালের ২২ মিনিটের মাথায় গোল আদায় করেন ৩৩ বছর বয়সী ডি মারিয়া। যার মাধ্যেমেই প্রায় একই সময় ক্যারিয়ার শুরু করা লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরো, নিকোলাস ওটামেন্ডিদের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা এনে দিলেন এই ফরোয়ার্ড।

মেসির অভিষেকের পর থেকেই ফাইনাল হেরে যাচ্ছিল আলবিসেলেস্তেরা। পেলে-ম্যারাডোনাদের পাশে বসতে ক্ষুদে জাদুকরের প্রয়োজন ছিল কেবল জাতীয় দলের হয়ে একটি শিরোপা। দলের অংশ হয়েই দেখেছিলেন ২০০৭ কোপার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ।

এরপর ২০১৪ বিশ্বকাপে অতিরিক্ত সময়ে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছেন মারিও গোৎজে। চিলির সোনালী প্রজন্মের কাছে হেরেছেন টানা দুবার। দারুণ ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠলেও বারবার হেরে যাচ্ছিলেন মেসিরা। টানা সাতটি ফাইনালে হারার পর অবশেষে ফাঁড়া কাটলো। অবশেষে ঘোচালেন খরা, এবারের টুর্নামেন্টেও দলকে টেনেছেন মেসি একাই।

এমনকি আসসের সর্বোচ্চ গোল আর অ্যাসিস্ট দুটোই তার দখলে। ভালো খেলার সুবাদেই কিনা ফুটবল বিধাতা এবার আর উপেক্ষা করতে পারেননি, জাতীয় দলের হয়ে আক্ষেপ মিটলো তার। শিরোপার আক্ষেপটা কি কেবল মেসির। ডি মারিয়ার কি কোনও অংশে কম!

আর্জেন্টিনা আর ডি মারিয়ার দুর্ভাগ্য যেন এগিয়েছে সমান্তরালে। আগের তিনটি ফাইনালের একটিতেও ছিলেন না এই উইঙ্গার। সবগুলো হারই তাকে দেখতে হয়েছে বেঞ্চে বসে। ২০১৪ বিশ্বকাপে অনবদ্য খেলে ফাইনালের ঠিক আগমুহূর্তে ইনজুরিতে পড়ে যান। ব্যথানাশক ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলতে চাইলেও ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের বিরোধীতায় খেলতে পারেননি মারিয়া।

সমর্থকরা এখনও বিশ্বাস করেন সেদিন ডি মারিয়া থাকলে ফলাফল অন্যরকম হলেও পারতো। পরের দুটো টাইব্রেকারের হারও দেখতে হয়েছে বেঞ্চে বসেই। এবারও পুরো টুর্নামেন্টে তাকে বদলি হিসেবেই ব্যবহার করেছেন কোচ স্কালোনি। তবে আজই প্রথমাবারের মতো নামিয়েছিলেন প্রথম একাদশে। তাতেই বাজিমাত, কোচের আশার প্রতিদান দিয়ে শিরোপা এনে দিয়েছেন দলকে। কাটিয়েছেন মেসির শিরোপা খরা, এনে দিয়েছেন অমরত্ব।

Loading