মামুনুলের সাতদিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ

প্রকাশিত: ১০:১০ অপরাহ্ণ , এপ্রিল ১৮, ২০২১

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করবে পুলিশ।

রোববার (১৮ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।তিনি জানান, আগামীকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) তাকে আদালতে পাঠিয়ে এ রিমান্ড আবেদন করা হবে।

ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মামুনুলকে আগামীকাল আদালতে প্রেরণ করে সাতদিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। ২০২০ সালের মোহাম্মদপুর থানার একটি ভাঙচুর ও নাশকতার মামলায় তদন্ত চলছিল। তদন্তে হেফাজত নেতা মামুনুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়ায় আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।’

এর আগে দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামুনুলকে গ্রেফতার করার পর দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ বলেন, দেশে বিভিন্ন সময় মামুনুল উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুরসহ নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সারা দেশে হেফাজতের তাণ্ডবে থানা এবং সরকারি অফিসসহ অনেক কিছুই ভাঙচুর হয়েছে। আমাদের মোহাম্মদপুর থানায়ও ভাঙচুরের একটি মামলা ছিল। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত করছিলাম। তদন্তের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, ২০২০ সালের এক মামলার সঙ্গে সে জড়িত। এ মামলায় আমরা তাকে জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে পৌনে ১টার দিকে গ্রেফতার করেছি। ওখান থেকে গ্রেফতার করে আমাদের অফিসে নিয়ে এসেছি।’ এ ঘটনার সত্যতা মামুনুল স্বীকার করেছেন বলেও জানান ডিসি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের ঘটনা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে হেফাজত। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুরসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। মামুনুলের বিরুদ্ধে অজস্র মামলা রয়েছে। আমাদের কাছে যে মামলাটি রয়েছে, তাতে আমরা সত্যতা পেয়েছি।’

মামুনুলকে আদালতে প্রেরণ করা হবে জানিয়ে ডিসি বলেন, আইনগতভাবে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব। আদালতে পাঠানোর আগে থানাতেই রাখা হবে।

মামুনুলের রিমান্ড আবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, তার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে, ওইসব মামলা এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর সাম্প্রতিক সহিংসতাে এবং রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়্যাল রিসোর্টে নারীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর ছাড়া পেয়ে ওই রাতেই ঢাকায় চলে আসেন মামুনুল। ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদিরাবাদ হাউজিংয়ের নিজ বাসায় না গিয়ে তিনি পাশেই জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় যান। এত দিন তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন।

Loading