বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সেরেনা

প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ , জুন ১, ২০২০

এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমি কতটা বিমর্ষ ও ব্যথিত তা বলা এবং প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এভাবেই নিজের কথাগুলো প্রকাশ করেন সেরেনা উইলিয়ামস।
সম্প্রতি মিনেপোলিসে পুলিশি হেফাজতে সাবেক কৃষ্ণাঙ্গ বাস্কেটবল তারকা জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর উত্তাল হয়ে পড়েছে মার্কিনমুলুক। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান বর্ণবাদ ও জাতিবিদ্বেষী মনোসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন দেশটির টেনিস কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামস।
সাদা বর্ণের পুলিশের হাতে তিনি খুন হওয়ায় প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন কালো মানুষগুলো। টানা ছয় দিন ধরে সেখানে তীব্র বিক্ষোভ চলছে। ক্রমেই তা সারাবিশ্বের সমর্থন পাচ্ছে।

গেল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রসিদ্ধ শহর মিনেপোলিসে সিগারেট কিনতে যান ফ্লয়েড। তার কাছে জালটাকা আছে সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে ৪৬ বছর বয়সী আফ্রিকান-আমেরিকান বংশোদ্ভূত এ খেলোয়াড়ের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক ছভিন। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়ে যায়।

এর পর প্রতিবাদে ফেটে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় শহরের কৃষ্ণাঙ্গ বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে কয়েক ডজন দোকানপাট পুড়িয়ে ফেলেছেন তারা। একই সঙ্গে মালামাল লুট করেছেন। সেই জেরে গেল শুক্রবার ছভিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থার্ড-ডিগ্রি মার্ডার এবং সেকেন্ড-ডিগ্রি মানুষ হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, শুধু গায়ের রঙ কালো হওয়ায় দোষ না থাকা সত্ত্বেও ফ্লয়েডকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছে সাদা ‘চামড়ার‘ পুলিশ সদস্য ছভিন। এতে তথাকথিত সবচেয়ে সভ্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখনও বর্ণ ও জাতিবৈষম্য বিরাজমান তা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।

প্রতিবাদে সরব হয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষগুলো। সেই ‘যুদ্ধে’ শামিল হচ্ছেন তারকা খেলোয়াড়রা। এরই মধ্যে এ নারকীয় ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন টেনিস তারকা কোকো গফ। ধিক্কার জানিয়েছেন দেশটির বাস্কেটবল মহাতারকা লেব্রন জেমস। এর ন্যায়বিচার চেয়েছেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে। এরা সবাই কালো গোত্রের।

এবার তাদের তালিকায় নাম লেখালেন নারী এককে ২৩টি গ্র্যান্ডস্লামের মালিক মার্কিন কৃষ্ণকলি সেরেনা। সদ্য নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি হৃদয়বিদারক ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে দেখা যায়, জ্বালাময়ী বক্তব্য দিচ্ছে এক আফ্রিকান-আমেরিকান শিশু (মেয়ে)। ডুকরে ডুকরে কেঁদে সে বলছে, কীভাবে তাদের সঙ্গে আলাদা (বাজে) আচরণ করেন শেতাঙ্গরা।

ক্যাপশনে সেরেনা লিখেছেন– এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমি কতটা বিমর্ষ ও ব্যথিত তা বলা এবং প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। কিন্তু আমার কথাগুলোর সন্ধান পেয়েছে সে। সার্বিক অর্থে আমাদের সবার অবস্থায় অনুভব করেছে ও এবং ব্যাখ্যা দিয়ে দুর্দশা তুলে ধরেছে। আমাদের অনেকে বোবা হয়ে গেছে… শব্দ হারিয়ে ফেলেছে… আমি কে তা জানি। এটি একটি দুঃসময়।

তিনি বলেন, আমরা প্রার্থনা করতে জানি। সুতরাং নিহত, আহত ও অত্যাচারিতদের জন্য আমি সবাইকে ঈশ্বরের কৃপা চাইতে বলব। এ রকম নৃশংস ঘটনা এই প্রথম নয়; এটি কেবল নতুনভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। আমি প্রচুর কষ্ট পেয়েছি। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।

তিনি বলেন, আমরা প্রার্থনা করতে জানি। সুতরাং নিহত, আহত ও অত্যাচারিতদের জন্য আমি সবাইকে ঈশ্বরের কৃপা চাইতে বলব। এ রকম নৃশংস ঘটনা এই প্রথম নয়; এটি কেবল নতুনভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। আমি প্রচুর কষ্ট পেয়েছি। আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।

তথ্যসূত্র: দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস/ইসেনশিয়ালি স্পোর্টস/টেনিস ওয়ার্ল্ড

Loading