গাজায় যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি জানাল ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী

প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ , জুন ৩০, ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আট মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির জন্য একাধিক দেশ চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির অগ্রগতির বিষয়ে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস।

শনিবার (২৯ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। অন্যদিকে তেলআবিবে হাজার হাজার ইসরায়েলি সড়কে নেমে এসেছেন। তারা নেতানিয়াহু সরকারের কাছে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে এবং চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন।

হামাসের সিনিয়র নেতা ওসামা হামদান বলেন, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী এখনও আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যেকোনো প্রস্তাবে আলোচনা করতে চায় হামাস।

লেবাননের রাজধানী বৈরুথে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত যা একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার এবং একটি বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করবে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ আরব দেশগুলো গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে উভয়পক্ষের অচলাবস্থার জন্য তা সফল হয়নি। হামাসের দাবি, চুক্তির জন্য গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হতে হবে। সাময়িক কোনো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চাইছে না গোষ্ঠীটি। অন্যদিকে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে।

হামাসের এ শীর্ষ নেতা অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের শর্ত মেনে নেওয়ার জন্য হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছে।

এর আগে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে প্রথমবারের মতো সুনির্দিষ্টভাবে একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৩ পর্যায়ে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের এই প্রস্তাবে ইসরায়েল সম্মত হয়েছে বলেও জানান তিনি। নতুন এই প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জো বাইডেন বলেন, ‘এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এসেছে’।

হামাসের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, ‘হামাস সবসময় বলে থাকে, তারা যুদ্ধবিরতি চায়। এখন হামাসের সামনে প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে যে, তারা আসলেই এটা চায় কি না’।

বাইডেনের প্রস্তাবে যা বলা হয়েছে:

বিবিসি জানিয়েছে, তিন পর্বের এই প্রস্তাবের শুরুতে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধ বিরতির কথা বলেছে ইসরায়েল। এটি হবে যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায়। এ সময়ে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা চলমান থাকবে। যদি আলোচনা সফল হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে বাদবাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। তাদের মধ্যে জিম্মি পুরুষ সেনারাও থাকবেন। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ সেনাকেও সরিয়ে নেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতিকে ‘স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধে’ উন্নীত করা হবে।

তৃতীয় পর্যায়ে জিম্মি ফেরানোর প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা হবে। গাজার জন্য বড় ধরনের একটি ‘পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। এর আওতায় মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজা উপত্যকায় বাড়ি, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পুনর্নির্মাণ করা হবে

Loading