আশুলিয়ায় ফেসবুকে সম্পর্ক গড়ে যুবক অপহরণ, ২ বোন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২:৩৮ পূর্বাহ্ণ , মার্চ ১১, ২০২২

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে কৌশলে ডেকে নিয়ে এক তরুণকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে দুই তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় ভুক্তভোগী যুবককেও উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকালে তাদেরকে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্যামলেন্দু ঘোষ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- লিপি বেগম (২৭) ও তার ছোট বোন সীমা বেগম (২৫)। ওই তরুণীদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। অপহৃত ওই যুবকের নাম সোলায়মান হক (২৬)।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্যামলেন্দু ঘোষ জানান, এক যুবক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, তার বন্ধু সোলায়মান হক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপহৃত হয়েছেন। তার বন্ধু আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় গিয়েছিল তার বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে। পরে তার বন্ধুর ফোন থেকে তাকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। টাকা পাঠানোর জন্য একটি বিকাশ নম্বর দেওয়া হয়েছে। টাকা না পাঠালে তার বন্ধুকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
এসআই জানান, অপহরণকারীরা সোলায়মান হককে মারধর করেন, যখন তাকে ফোন করেছিল তখন তার বন্ধুকে মারধরের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন কলার। তবে আটক হওয়ার আগে তার বন্ধু হোয়াটসঅ্যাপে তার অবস্থানস্থল গুগল ম্যাপে পাঠিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী কলার জানান, তার বন্ধু আশুলিয়া থানার বাইপাইল ন্যাশনাল ব্যাংকের পেছনে একটি ভবনে আটক আছেন।
আশুলিয়া থানার এসআই শ্যামলেন্দু ঘোষ আরও জানান, ৯৯৯-এর কলটি কনস্টেবল মো. রেজোয়ান মিয়া রিসিভ করেছিলেন। কনস্টেবল রেজোয়ান তখনই আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসারকে বিষয়টি জানান। ওই সময়ে রেজোয়ান টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলিয়ে দেন। পরে ৯৯৯ এর এসআই শাহরিয়ার রুবেল কলার এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে পুলিশি তৎপরতার আপডেট নিতে থাকেন।
খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরে আশুলিয়া থানার এসআই শ্যামলেন্দু ঘোষ জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকে রাখা বাড়িটি চিহ্নিত করেন। সেটি ছিল গাজীরচটে তাহের পাটোয়ারীর বাড়ি ‘কুসুম ভিলা’। এরপর বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী সোলায়মান হককে উদ্ধার করা হয়। তখন জানাযায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোলায়মানের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। এরপর ধীরে ধীরে প্রেম হতে থাকে। পরে দেখা করতে আসলে তাকে আটক রেখে মারধর করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পুলিশ জানায়, আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে লিপি বেগম এবং তার বোন সীমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের পুরুষ দুই সহযোগী পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক লিপি বেগম ও সীমা বেগম লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার বড়খাতা গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। তারা বর্তমানে গাজীরচট আশুলিয়ার ওই বাসায় বসবাস করতেন।

Loading