![]() | মেহেদী হাসান,টাঙ্গাইল |
সব স্বাদ ¤øান হয়ে যায়। মৌচাকা চমচম মুখে দিলে অন্য স্বাদ পুরানো হয়ে যায়। যেকোন
ভোজে টাঙ্গাইলের চমচম রাখা মানে বিশেষ ঘটনা। টাঙ্গাইল শহরে পা রাখতেই চোখে পড়ে
অগনিত মিষ্টির দোকান। রসগোল্লা, সন্দেশ, আমির্তি, রসমালাই সহ চেনা মিষ্টি দিয়ে
সাজানো। তবে মূল আকর্ষন চমচম। টাঙ্গাইলে পোড়াবাড়ীর চমচম আকারে বড় ডিম্বাকৃতি।
বাহিরের অংশটি, খুব লক্ষ করে দেখা গেল পোড়া মাটির মতই। আগুনে পোড়া মাটি যে রং ধারণ
করে, সেই লালচে রং, গা মসৃন বটে, উপরিভাগটা বালির মত দানা দানা।
কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মাওয়ার গুড়া কিংবা দুধ জাল দিয়ে শুকিয়ে গুড়া করে সেই
গুড়া চমচমের উপর ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এতে চমচম দেখতে আরও আকর্ষণীয় হয় এবং স্বাদটাও
বাড়ে। হাতে নিলে রস চুয়ে পড়ে না, ভেতরে জমা থাকে ঠিকই।
জানা যায় গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার দোকানের শুরুটা করেছিলেন রাধা বল্লভ দাস। ৭২ বছর বয়সী
দোকান ১৯৪৬ সালে চালু করা হয়। বর্তমানে পৈত্রিকভাবে ব্যবসা চালু রেখেছেন তার পুত্র গোপাল
দাস। মিষ্টির ইতিহাস সম্পর্কে গোপাল দাস বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষেরা ছিলেন আসামের
সেখান থেকে জীবিকার সন্ধানে চলে আসেন টাঙ্গাইলে। প্রথমে ঝাল-মড়ি ইত্যাদি বিক্রী
করতেন। পরে তারা মিষ্টি তৈরির কাজ শুরু করেন। গোপাল দাসের দায়িত্ব ছাড়ার আগেই নিজেকে
প্রস্তুত করে নিয়েছেন তার ছেলে কৃষ্ণ দাস। অন্য অনেক কিছুই করা যেত কিন্তু এটি আমাদের
কাছে শুধু ব্যবসা নয় ঠাকুরদাদের ঐতিহ্য একারণেই মিষ্টির দোকানে বসি।
পুরানো দোকানের মধ্যে আর একটি হল জয়কালী। এটিরও সুনাম ব্যাপক। এই দোকান শুরু
হয়েছিল খোকা ঘোষের হাতে বর্তমানে যা পরিচালিত হচ্ছে তার ছেলে স্বপন ঘোষের হাতে। গত
প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ বছর ধরে এই ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। পিতার পেশাকেই পেশা হিসাবে
গ্রহন করেছেন। দোকানে গিয়ে দেখা যায় সুন্দর পরিবেশে মিষ্টি কারিগররা তৈরী করছে বাহারি
মিষ্টি, যা দোকানের সামনে সারি সারি করে সাজিয়ে রেখেছে। স্বপন ঘোষ আলাপকালে
জানান, নানা কারণে পোড়াবাড়ী তার জৌলুস হারিয়েছে। ময়রাদের অনেকেই মৃত্যুবরন করেছেন।
কেউ কেউ তাদের পেশা পরিবর্তন করেছেন এবং বাকিরা চলে এসেছেন টাঙ্গাইল শহরে।
পাঁচআনি বাজারে এসে তারা নতুন করে কাজ শুরু করেছেন তারা। আমাদের দোকানেও অনেক
পুরানো কারিগর আছেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তারা। মূলত তাদের হাত ধরেই বেচে আছে
ঐতিহ্য। পোড়াবাড়ীর চমচম বলতে তাদের তৈরীকৃত চমচমকেই বোঝায়। এত স্বাদ, কেন? জানতে
চাইলে তিনি একটি তৃপ্তির হাসি হাসেন। তিনি বলেন, আমরা চমচমে কোন রং বা কেমিকেল
ব্যবহার করি না। চমচম তৈরী উপকরণ বলতে শুধুই দুধ আর চিনি। ছানার ময়ান ও চিনির শিরা
তৈরীতে পানির প্রয়োজন হয়। চমচম মূলত কারিগরদের দক্ষতা ও দীর্ঘদিনের চর্চার ফল বলে তিনি
জানান।
19.03.2018 | 09:06 PM | সর্বমোট ২৫৩ বার পঠিত
26.04.2018 | 04:12 PM
25.04.2018 | 10:31 PM
25.04.2018 | 09:07 PM
13.04.2018 | 03:59 PM
26.04.2018 | 02:27 PM