সাতকানিয়ায় উদ্বোধনের আগেই ধসে গেছে সড়ক

প্রকাশিত: ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ , জুলাই ২৫, ২০২০

সাতকানিয়ার সোনাকানিয়ায় উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়েছে মির্জারখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক। হাতিয়ারখাল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় সড়কটি ধসে পড়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন এবং সোনাকানিয়ার অনেক মানুষ। ব্রিজের নিচ থেকে সড়কের পাশ ঘেঁষে বালু উত্তোলনের কারণে উদ্বোধনের আগেই সড়কটি ধসে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে সোনাকানিয়া ইউনিয়নের মির্জারখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়কের ৭০০ মিটার এলাকা কার্পেটিং করা হয়েছে। সড়কটি কার্পেটিংয়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫১ লাখ টাকা। ঠিকাদার ইতিমধ্যে সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ সম্পন্‌্ন করেছে। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার দুপুরে সড়কের হাতিয়ার খাল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ৮-১০ ফুট সড়ক ধসে গেছে। ফলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বশির আহমদ চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবত হাতিয়ার খালের উপর নির্মিত ব্রিজের নিচ ও সড়কের পাশ ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছে। ফলে খালে পানি আসার সাথে সাথে ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে মাটি সরে গেছে। এতে সড়কটি ধসে গেছে। তারা আরো জানান, বালু উত্তোলন বন্ধ করা না গেলে হাতিয়ার খালের উপর ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটিও রক্ষা করা যাবে না। এজন্য হাতিয়ার খাল হতে ব্রিজের আশপাশের এলাকা থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এছাড়া নবনির্মিত সড়কটির কাজেও অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া সড়কটি মেরামত এবং খাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আবছার চৌধুরী জানান, সড়কটির মাটি ধসে যাওয়ার খবর শুনে আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে হাতিয়ার খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ ও মির্জারখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়কটি কার্পেটিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। এখনো উদ্বোধন পর্যন্ত হয়নি। সড়কের কাজে অনিয়ম ও ব্রিজের নিচ থেকে এবং সড়কের পাশ ঘেঁষে বালু উত্তোলনের কারণে সড়কটি ধসে পড়েছে। ফলে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানাই। তিনি আরো জানান, বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে অবগত করা হয়েছে। সাতকানিয়া আইন শৃক্সখলা সভায়ও বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।
বালু উত্তোলনের বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বশির আহমদ চৌধুরী জানান, ব্রিজের আশপাশের এলাকা থেকে আমি বালু উত্তোলন করিনি। ব্রিজ থেকে কমপক্ষে দেড় হাজার ফুট দূরে আমার ইজারাভুক্ত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করেছি। হাতিয়ার খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ এবং মির্জারখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়কটি নির্মাণের জন্য আমিই সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেছি। আমার কষ্টের ফসল হিসেবে এ সড়ক কার্পেটিং হয়েছে এবং ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে। এখন উল্টো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে? ব্রিজের নিচ থেকে এবং সড়কের আশপাশ থেকে বালু উত্তোলন করেছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের যাবতীয় ক্ষতিপূরণ আমি দেব।
মির্জারখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ পাওয়া ঠিকাদার কিরণ শর্মা জানান, আমার কাজ হলো সড়কের কার্পেটিং করা। সড়কের ৭০০ মিটার এলাকা কার্পেটিংয়ের জন্য ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। আমি ইতিমধ্যে কাজ শেষ করেছি। সড়ক ধসে যাওয়ার সাথে আমার কাজের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ পানির স্রোতের টানে ব্রিজের পাশ থেকে বালু সরে গেলে সড়ক ধসে পড়তে পারে। এতে আমার কিছু করার নেই।
সাতকানিয়া উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সারোয়ার জাহান জানান, শুনেছি মির্জারখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে হাতিয়ার খালের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় কিছু অংশ ধসে গেছে। আমি আজ শনিবার সরেজমিন পরিদর্শন করবো। এরপর জানতে পারবো আসলে কেন ধসে পড়েছে। এছাড়া সড়কের ধসে যাওয়া অংশ দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা হবে। আজাদী

Loading