দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণের দিন আজ

প্রকাশিত: ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ , অক্টোবর ১০, ২০২৩

আজ ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যোগাযোগ ও সমৃদ্ধির নতুন দ্বার উন্মোচনে উচ্ছ্বসিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। তাদের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, ট্রেনে পড়ে দেবেন পদ্মা পাড়ি।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের মুন্সীগঞ্জের মাওয়া রেল স্টেশনে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন তিনি।

দুপুর পৌনে ১টায় মাওয়া থেকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে ট্রেনে যাত্রা করবেন। একটি বিশেষ ট্রেনে পদ্মাসেতু পাড়ি দেবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টায় ফরিদপুরে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা রেল সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ভাঙ্গায় কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে এই জনসভার আয়োজন করা হয়েছে।

বিকাল ৪টায় ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকাল সাড়ে ৫টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবেন। পরে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে রাত যাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২টায় টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করবেন। দুপুর আড়াইটায় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে ১০০ নতুন কোচও কেনা হয়েছে। নতুন কোচ দিয়েই পদ্মাকেন্দ্রিক ট্রেনগুলো পরিচালনা করা হবে।

পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে কমলাপুর (ঢাকা) থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন থাকবে, এর মধ্যে ১৪টি স্টেশনই নতুন। কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের নিমতলা, শ্রীনগর ও মাওয়া স্টেশনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। মাওয়া স্টেশনের পরে পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় নির্মিত হচ্ছে ‘পদ্মা স্টেশন’। পদ্মা স্টেশনের পরে শরীয়তপুরে ‘শিবচর স্টেশন’।

প্রকল্পের বিবরণে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণ করছে। এর ৮২ কিলোমিটার অংশ ঢাকা ও ভাঙ্গাকে সংযুক্ত করে আজ খুলে দেওয়া হবে এবং এর যশোর সংযোগকারী অবশিষ্ট অংশটি আগামী বছরের জুনে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত বছরের জুনে যুগান্তকারী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর দুই মাস পর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সার্ভিস উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে বিশেষ ট্রেনের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়।

এর আগে, পদ্মা সেতুতে পাথরহীন রেললাইনের কাজ শেষ হওয়ার পর গত ৪ এপ্রিল ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত পর্যন্ত ট্রায়াল ট্রেন চালায় বাংলাদেশ রেলওয়ে।

গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেল সংযোগ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯,২৪৬.৮০ কোটি টাকা। এতে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২১,০৩৬.৭০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে।

প্রকল্পের বিশদ বিবরণে বলা হয়েছে, সমাপ্ত হওয়ার পর, রেল যোগাযোগ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানী শহরের প্রবেশ পথ আরও বর্ধিত হবে। যা মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর এবং নড়াইল জেলার নতুন এলাকাকে যুক্ত করবে।

প্রকল্পটি ঢাকা-যশোর-খুলনাকে ২১২.০৫ কিলোমিটার সংক্ষিপ্ত রুট দিয়ে বিকল্প রেলপথ সংযোগ স্থাপন করবে।

এটি বাংলাদেশে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি উপ-রুট স্থাপন করবে এবং জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালবাহী ও বিজি কন্টেইনার ট্রেন পরিষেবা চালু করবে। এই রুটটি কন্টেইনার বহনের জন্য গতি এবং লোড সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হবে।

Loading