বেতনের টাকা ফেরতের নির্দেশ

প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ , মে ২৬, ২০২৩

মাদারীপুরে জাল সনদে নিয়োগ হওয়ায় তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বেতনের টাকাসহ সরকারি সকল সুবিধা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ বিদ্যালয়ের প্রধানকে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে যে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষকের জাল সনদের প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে সবাই সরকারি বেতন তুলেছেন। ভুয়া সনদে এমপিওভুক্ত হওয়া ওই তিন শিক্ষক বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে ২০ লাখ ২২ হাজার ২৭৫ টাকা গ্রহণ করেছেন।

এর মধ্যে মাদারীপুর বাঘরিয়া ম্যাধমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মন্ডল সমীর কুমার ৫ লাখ ১ হাজার ৭৯৫, মাদারীপুরের শিবচর নারিকেলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের সহকারী শিক্ষক তরিকুজ্জামান ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯০, কালকিনি ক্রোকিরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগের সহকারী শিক্ষক তাপতী বিশ্বাস ৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৯০ টাকা তুলেছেন।

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুরের শিবচরে নারিকেলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের সহকারী শিক্ষক তরিকুজ্জামান নোটিশ পাওয়ার পর থেকে পাঠদান বন্ধ রেখেছেন, কালকিনি ক্রোকিরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা বিভাগের সহকারী শিক্ষক তাপতী বিশ্বাস নোটিশ দেওয়ার কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন, মাদারীপুর বাঘরিয়া ম্যাধমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মন্ডল সমীর কুমারকে তার স্কুলে গিয়ে ও তার মুঠোফোন একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, জাল সনদে নিয়োগ পাওয়া এসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতেও চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি)। চিঠিতে ওই জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে সাত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অবৈধভাবে গ্রহণ করা বেতন সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া, যারা অবসরে গেছেন তাদের অবসর সুবিধা বাতিল করা, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আপত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে আদায় করা, জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রভৃতি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) যাচাই বাছাইয়ে এসব জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারী চিহ্নিত করা হয়। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে সনদ প্রদানকারী দপ্তর প্রধান বা প্রতিনিধির সমন্বয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সনদ যাচাই করে জাল সনদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবউল্লাহ চৌধুরী বলেন, মাদারীপুরে জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমাদের কোনো কিছু নেই, তারা যদি আমাদের আদেশ দেয় তাহলে আদেশের পর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Loading