অস্ত্রসহ ৩ জলদস্যু গ্রেফতার

প্রকাশিত: ৫:৩৮ অপরাহ্ণ , ডিসেম্বর ২৬, ২০২২

সুন্দরবন থেকে দেশিয় অস্ত্র ও গেলাবারুদসহ জলদস্যু নয়ন বাহিনীর তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোর ৪টা ১০ মিনিটে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জয়মনির ঘোল গ্রামস্থ মিরাগামারী খালের উত্তর পাড় থেকে এই দস্যুদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক।

এসময় বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস) মো. রাসেরুলুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলমসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের মৃত মকবুল ফরাজীর মো. মাসুম ফরাজী(৩৫), একই গ্রামের মো. আব্বুস কবিরাজের ছেলে মো. হাছান কবিরাজ (৩০) এবং বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ারী গ্রামের মৃত আমির হোসেন হাওলাদারের ছেলে মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদার (৫০)। আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১টি দেশিয় তৈরি একনালা বন্দুক, ৩ রাউন্ড কার্তুজ, কাঠের বাটসহ ২টি রামদা, ২টি লোহার রড, ১টি কাঠের পুরাতন ডিঙ্গি নৌকা, ২টি টর্চ লাইট, ২ পুরাতন সুতী চেকের গামছা, হাত-পা বেধে রাখার কয়েক টুকরা লাইলনের রশি, ১টি স্কচ টেপ এবং বিভিন্ন সাইজের ৪টি গরান গাছের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, সম্প্রতি সুন্দরবন থেকে মাছ ধরার সময় কিছু জেলেদের অপহরণ করে বনদস্যুরা। কৌশলে জেলেদের উদ্ধার করলেও, বনদস্যুরা অধরা ছিল। কিন্তু পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। এই ধারাবাহিকতায় মিরাগামারী খালের উত্তর পাড় থেকে অস্ত্রসহ তিন বনদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে।

এসব দস্যুরা আত্মসমর্পনকৃত দস্যু কিনা এমন প্রশ্নে পুলিশ সুপার বলেন, এই দস্যুরা কেউই আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা দস্যু নয়। এরা সবাই এক সময় সুন্দরবনে জেলে হিসেবে মাছ আহরণ করত। কিন্তু হঠাৎ করে তারা দস্যুতা বৃত্তিতে লিপ্ত হয়। এরা নিজেদেরকে নয়ন বাহিনীর লোক বলে পরিচয় দিয়েছেন। মাছুম ফরাজী নয়ন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। মাছুম ফরাজীর বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন অপরাধে
তিনটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও সুন্দরবনের দস্যুতার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।

১৫ ডিসেম্বর বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগেরর চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের বেড়ির খাল ও হরমল খাল থেকে ১১ জন জেলেকে অপহরণ করে দস্যুরা। পরে জেলেপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে দস্যুরা। ২১ ডিসেম্বর অপহৃত ১১ জেলেকে উদ্ধার করা হয়।

Loading