৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস

আদনান সুবুজ আদনান সুবুজ

সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টর

প্রকাশিত: ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ , ডিসেম্বর ৭, ২০২২

৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস। মুক্তি যুদ্ধের সেনারা একাওর সালের এইদিনে জেলা শহর মাইজদীতে রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটির পতন ঘটিয়ে মাইজদী তথা নোয়াখালী মাটিয়ে উড়িয়েছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা।

পাকিস্তানি সেনারা কয়েক দফায় জেলা সদরের সোনাপুর, শ্রীপুর, গুপ্তাংক, রামহরিতালুক, বেগমগঞ্জের কুরীপাড়া, গোপালপুর ও আমিশাপাড়ায় নির্বিচারে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।

এ সময় গুলি ও পুড়িয়ে প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে হানাদার বাহিনী। গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এরপর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে ভারত  থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

কোম্পানীগঞ্জের বামনী, তালমাহমুদের হাট, ১২ নং স্লুইস গেইট, সদরের উদয় সাধুর হাট (ওদারহাট), করম বক্সবাজার, বেগমগঞ্জের ফেনাকাটা পোল, রাজগঞ্জ ও বগাদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধেঅংশ নিয়ে শহীদ হন অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা।গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি, দোকান পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

নোয়াখালী মুক্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মাইজদী পিটিআই ও বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাইস্কুলক্যাম্প ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যেতে থাকে পাক বাহিনী। এসময় বেগমগঞ্জ-লাকসাম সড়কের বগাদিয়া ব্রিজ অতিক্রম করতেই সুবেদার লুৎফুর রহমান ও শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনীর হাতে অসংখ্যপাক সেনা নিহত হয়।

সাত ডিসেম্বর সূর্য উদয়ের আগে থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে বিজয় মিছিল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা একযোগে মাইজদীতেপিটিআই ক্যাম্পে হানা দেয়। সন্ধ্যার আগেই মুক্ত হয় জেলা শহর মাইজদী। মুক্ত হয় নোয়াখালী।

সেই দিন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা হাতে নিয়ে হাজারো মুক্তিকামী মানুষ জয় বাংলা স্লেগানদিয়ে বিজয় উল্লাসে মেতে উঠে জেলা শহর মাইজদীতে।

তাই ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস স্মরণে পিটিআই ভবনের প্রধান গেটের সামনে ‘মুক্ত নোয়াখালী’ নাম দিয়েএকটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়।

পিটিআই গেটে মুক্ত নোয়াখালী নামে যে সৌধটি দাঁড়িয়ে আছে এটি ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত হওয়ার স্বাক্ষরবহন করে। নোয়াখালী মুক্ত দিবস হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রেরণার উৎস। এটাই এখানকার মুক্তিকামী জনগণের প্রত্যাশা।

Loading