আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সম্মাননা পেলেন যশোরের নূপুর আক্তার নোভা

প্রকাশিত: ২:৫৪ অপরাহ্ণ , ডিসেম্বর ৬, ২০২২

কোভিড পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক নির্ভরতায় সেচ্ছাসেবী কর্মসূচীতে অসামান্য অবদান রাখাই আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস ২০২২ সম্মাননা পেলেন যশোর কৃতি সন্তান নূপুর আক্তার নোভা
তিনি ঢাকার যুব সংগঠন দয়িতা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
৫ ডিসেম্বর রোজ সোমবার রাজধানীর এলজিডি ভবনে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস উপলক্ষে ইউএনভি বাংলাদেশ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ, গুড নেবারস বাংলাদেশ, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথভাবে আয়োজিত “আন্তর্জাতিক সেচ্ছাসেবী দিবস সম্মাননা “অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা লাভ করেন তিনি।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন,
ইউএনভি’র কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মোঃ আকতার উদ্দিন, গুড নেবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর
মাইনুদ্দিন মইনুল, কইসা’র কান্ট্রি ডিরেক্টর
ডু ইয়ং অহ, ডিপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ ভ্যান লিগুয়েন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এডিশনাল সেক্রেটারী মিসেস শিকা সরকার, এলজিইডি’র চীফ ইন্জিনিয়ার এসকে মোঃ মহসিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সেক্রেটারি ,স্থানীয় সরকার বিভাগ মোঃ ইবরাহিম প্রমুখ।
প্রতি বছর তরুণ সেচ্ছাসেবীদের বিশেষ অবদানের জন্য এই সম্মাননা ও স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এই বছর যে সকল ইয়ুথ কোভিড পরবর্তী কার্যক্রমে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক নির্ভরতায় সেচ্ছাসেবী কর্মসূচীতে অসামান্য অবদান রেখেছে তাদের মধ্য থেকে ৩০০ জন প্রতিযোগি থেকে বাছায় করে সেরা ২০ জনকে এ সম্মাননা প্রদান করে। যার মধ্যে নূপুর আক্তার নোভা ২য় স্থান অর্জন করেছেন।
সম্মাননা পাওয়ার পর নূপুর আক্তার নোভা বলেন, এই প্রাপ্তি আমার জন্য অনেক আনন্দের ও আবেগের।এটা আমার সেচ্ছাসেবী কাজের প্রাপ্তি। কৃতজ্ঞতা জানায় ইউএনভি বাংলাদেশ,বাংলাদেশ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে।

নূপুর আক্তার নোভা আরো বলেন : দয়িতা ফাউন্ডেশন গভীরভাবে বিশ্বাস করে, ‘নারী ক্ষমতায়নে দেশের অগ্রগতি’। বর্তমান সময়ে বিদ্যমান লিঙ্গ অসমতা ও বৈষম্য এই দেশকে ক্ষুধামুক্ত ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায়। নারীকে অবদমিত রেখে টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা কখনোই সম্ভব নয়। যদি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেও দেখা যায়, নারীদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে জন্মশাসন অধিকতর সফল হয়। আর্থিক কর্মকাণ্ডে নারী পুরুষের চাইতে অনেক বেশি সৃজনশীল ও দায়িত্ববান। নারী শিক্ষার হার বাড়লে সমাজে সামগ্রিক শিক্ষার হার বৃদ্ধি পায় এবং পরিবারে চিকিৎসা ব্যয় ও অপরাধ প্রবণতা তুলনামূলক হারে কমে আসে। নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলে লিংগ সমতা আইন ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়।
দয়িতা ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত এমন সব জায়গায় কাজ করেছে যেখানে নারী শিক্ষা তো দূরে বরং সেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সচেতনতাও নেই বললেই চলে। বাল্যবিবাহ সেখানে সাধারণ কাজের একটি গণ্য হয়। সাধারণ গার্মেন্টস কর্মী থেকে শুরু করে অজপাড়া গায়ের মাঝিপারার মহিলা কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুল শিক্ষার্থীর সাথে কাজের অভিজ্ঞতা যদি বলতে যাই তাহলে হয়ত এইটুকুই বলতে পারি আমাদের নেয়া উদ্যোগ ঠিক এই মানুষগুলোর জন্যই। আমরা শুধু নারী শিক্ষা, অধিকার, স্বাস্থ্য সচেতনতা কিংবা বাল্যবিবাহ নিয়েই কাজ করছি না। নারী আত্বপ্রতিরক্ষা বিষয়েও ট্রেইন করে থাকি। যেনো প্রতিটি মেয়ে তার নিজ সুরক্ষা নিজেই করতে পারে। আমরা আরো শিখিয়ে থাকি কিভাবে একজন মেয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজ কর্মসংস্থান এবং অবস্থান নিজেই তৈরি করে নিতে পারে।
তাই “দয়িতা ফাউন্ডেশন” নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ের একদল নারীকে সংগঠিত, ক্ষমতায়িত ও তাদের সামর্থ্য বিকাশের জন্যে নিবিড় ও ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ-কর্মশালা পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীনেত্রী স্থানীয় পর্যায়ে বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানিসহ নারীর প্রতি সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারাভিযান পরিচালনা করছেন এবং প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন। তারা অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায়। উল্লেখ্য, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণের নানান ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।

Loading