শতকোটি টাকা গচ্চার পর হুঁশ হলো রেল কর্তৃপক্ষের

প্রকাশিত: ১১:২২ পূর্বাহ্ণ , আগস্ট ৪, ২০২২

শতকোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার পর হুঁশ ফিরেছে রেল কর্তৃপক্ষের। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে এ টাকা দিয়ে ইআরপি সফটওয়্যার ও কেন্দ্রীয় ডাটা সার্ভার স্থাপন করে রাষ্ট্রীয় এ সেবা সংস্থাটি।
যদিও ৭ বছরেও এ প্রযুক্তি চালু করতে পারেনি তারা। বরং ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে সব যন্ত্রপাতি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি নেয়ায় ভুল ছিল তাদের। আগেরটি সেকেলে হওয়ায় এবার আপডেট প্রযুক্তির আরেকটি প্রকল্প হাতে নিতে চায় রেল।

স্বচ্ছতা এবং কাজে গতি আনতে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা খরচে ইআরপি সফটওয়্যার কেনে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০১৫ সালে কেনা এ সফটওয়ার অব্যহৃত পড়ে আছে এখনও। কেন এ উদাসীনতা? সময় সংবাদের ক্যামেরার সামনে উত্তর দিতে নারাজ রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে নিশ্চত করেছেন, একদিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি অলস পড়ে থাকা এ সফটওয়্যারগুলো।

বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান সংকেত ও টেলি যোগাযোগ প্রকৌশলী (সিএসটিই) বেনু রঞ্জন সরকার বলেন, ‘আমি আসার পর থেকে দেখছি এটির ব্যবহার নেই।’

বেনু রঞ্জন সরকার আরও বলেন, আসলে এটি করাই উচিত হয়নি। কারণ আইসিটি বিভাগ না খুলে প্রকল্প নেয়াটা উচিত হয়নি। সফটওয়্যারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সাত থেকে আট বছর আগে। সুতরাং এগুলো তো আর ব্যবহার করা যায় না।

আরেক কর্মকর্তা জানান, আমি কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করি না।

ঢাকা বিভাগ রেলওয়ের এসএসআই, সিগন্যাল ও টেলিকম কর্মকর্তা আরিফ মাহমুদ বলেন, সময় চলে যাওয়ায় সার্ভিস সাপোর্ট পাওয়া যাবে না। প্রতিটি ইক্যুইপমেন্টের একটা সময় থাকে; অলরেডি কমার্শিয়াল লাইফ চলে গেছে। এখন কোনো কাজে লাগছে না, যেহেতু কোনো সার্ভিস নাই।

ইআরপি সফটওয়্যারের সব তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য ২২ কোটি টাকায় কেনা হয় ডাটা সংরক্ষণ সার্ভার। সেখানকার অবস্থায়ই বা কী- জানতে হাজির হয় সময় সংবাদ। তবে বন্ধ পাওয়া যায় সার্ভার রুম।

দুই ঘণ্টা পর এক কর্মকর্তার সহায়তায় সার্ভার রুমে গিয়ে দেখা যায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে কেন্দ্রীয় ডাটা সেন্টার। অকেজো অন্যান্য যন্ত্রপাতিও। কোটি কোটি টাকায় কেনা এসব যন্ত্রপাতি চালুর আগেই মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলে জানান অপারেটর।

আরেকটি কক্ষেই রয়েছে দেশের ৬১টি স্টেশনকে কেন্দ্রীয় সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ২৭টি লজিক্যাল সার্ভার। ব্যবহার না হওয়ায় ৪৪ কোটি টাকায় কেনা এসব যন্ত্রপাতিও বিকলের পথে।

আরিফ মাহমুদ বলেন, এখন কোনো কাজে লাগছে না; যেহেতু কোনো সার্ভিস নাই, এসব মেশিনের লাইফও প্রায় শেষ।

৯৬ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি যখন অকেজো তখন দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকল্প নেয়াটাই ভুল ছিল। তারা এখন হাঁটছেন আপডেট প্রযুক্তির আরেকটি প্রকল্পের দিকে।

প্রযুক্তি নির্ভর এ যুগেও রেলের নিজস্ব কোনো আইটি বিভাগ যে নেই, তাই ফুটে ওঠেছে এসেছে এ প্রতিবেদনে। – সময় সংবাদ

Loading