চিরিরবন্দরে এক যুগ ধরে বন্ধ বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত

প্রকাশিত: ৫:৫৭ অপরাহ্ণ , জুলাই ২২, ২০২২

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের দক্ষিণ শুকদেবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এবছর গত ৬ জুলাই প্রকাশিত এমপিওভূক্তির তালিকায় নাম এসেছে। এমন খবরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আনন্দিত হলেও বিস্মিত হয়েছেন এলাকার অনেকেই।এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন প্রায় একযুগ ধরে বিদ্যালয়টি বন্ধ রয়েছে।কোন ছাত্র ছাত্রী নেই আবার এ প্রতিষ্ঠানটি এমপিও হয় কেমন করে।

সরেজমিন বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায়, কোন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে। বিস্তীর্ণ খোলা মাঠেগরু ঘাস খাচ্ছে। রাস্তার পশ্চিমে একটি খোলা টিনশেড, যেখানে একপাশে দুটো খড়ের গাদা আর তার পার্শ্বেই পাশের বাড়ির কয়েকজন মহিলা একটি দোলনায় একটি শিশুকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছেন। টিনশেডের সঙ্গে লাগানো লম্বা তিনটি আধাপাকা টিনশেডের ঘর। বারান্দার কিছু মরচে পড়ে নষ্ট হয়ে একদিকে ভেঙ্গে পড়েছে, ঘরের টিনগুলোর অবস্থা একই রকম। প্রথম রুমের দরজায় তালা লাগানো তবে জানালার পাল্লা না থাকায় উঁকি দিয়ে দেখা যায় দেয়ালে সিমেন্টের ব্ল্যাকবোর্ড এটিকে ক্লাশরুমের জানান দিচ্ছে, তবে কোন বেঞ্চ বা অন্য কোন আসবাব নেই। পাশের দুটো রুমে তালা নেই। খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে দেখা যায়, দীর্ঘদীন পরিত্যাক্ত থাকায় ঘরের মেঝেতে আগাছা জন্মেছে। এককোণে দুটি টয়লেটের অস্তিত্ব থাকলেও আগাছায় ভেতরে যাবার পথ বন্ধ।

বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা জানিয়েছে বিদ্যালয়টি এমপিও হয়েছে এখন নতুন করে আবর সবকিছু ঠিক করা হচ্ছে। ঘরের টিন গুলো পাল্টানো হচ্ছে বিদ্যালটি মেরামত শেষ হলে দ্রুত ক্লাস শুরু করা হবে।

পার্শবর্তী গ্রাম আন্ধারমুহার বাসিন্দা নাসিরউদ্দীন বলেন,প্রায় দশ-পনের বছর থেকে স্কুলটি বন্ধ। আগে ভালো চললেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিল্ডিং সবকিছু ভেঙ্গে পড়েছে।এখন শুনছি এমপিও হয়েছে স্কুলটি আবার চালু হবে।

বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির রাহেলা খাতুন বলেন,অনেকদিন থেকে স্কুলটা বন্ধ। মাষ্টাররা বেতন পায়না কিভাবে চলবে । এখন সরকারী হইছে ছাত্র ভর্তি নিবে স্কুল আবার চালু হবে।

শুকদেবপুর গ্রামের রহিম বলেন,এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছে এরকম খবরে শিক্ষকরা কিছুদিন থেকে আবারো তাদের তৎপরতা শুরু করলেও ছাত্র ছাত্রী না থাকায় পঠদান শুরু করতে পারেননি।

বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারি শিক্ষক পরিমল অধিকারী বলেন ,আমি করোনার আগে অন্য একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেম এখন বিদ্যালয়টি এমপিও হয়েছে আবার যোগদান করব। ১৯৯২ সালে চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বুর রহমান শাহ পারিবারিকভাবে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে কয়েকশত শিক্ষার্থী পড়াশোনা করলেও দীর্ঘদীন এমপিওভূক্ত না হওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে হতাশা কাজ করতে থাকে। তারা জীবীকার প্রয়োজনে বিভিন্নজন বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হলে স্কুলটিতে ভাটা পড়ে। শিক্ষার্থী কমতে কমতে থাকায় করোনার আগে একপর্যায়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আফরোজা বেগম বলেন, অনেক আশা নিয়ে বিদ্যালটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার আর মাত্র বছর দেড়েক চাকরী আছে আমার।স্কুলটির সবকিছু মেরামত করা হচ্ছে নতুন করে প্রতিষ্ঠানটি আবর চালু হোক।কয়েকদিনে মধ্যে ক্নাস চালু হবে ।শিক্ষার্থী কতজন জানতে চাইলে তিনি সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন নি। কোথায় ক্লাশ হয় জানতে চাইলে জানান শিক্ষকরা এলাকা ভাগ করে কোচিং করান

Loading