অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ

প্রকাশিত: ১:৪৮ অপরাহ্ণ , এপ্রিল ৩০, ২০২২

ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সড়কের অবস্থা এখন ভালো। এবার ঈদযাত্রা স্বস্তিতেই কাটছে।

অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে কাদের বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কারণে গতকাল (শুক্রবার) চারটি কাউন্টারকে জরিমানা করা হয়েছে। বাস টার্মিনালগুলোতে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত আছে। যাত্রীদের অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে।

শনিবারও গাবতলীতে বেশ কয়েকটি পরিবহনে ‘দ্বিগুণ’ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে–এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ যেহেতু এসেছে, সেটা মিথ্যা মনে করার অবকাশ নেই। ঘটনা ঘটেছে বলেই অভিযোগ আসছে। আমি বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে এখনই বলে দিচ্ছি অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে।’

এর আগে শুক্রবারও গাবতলী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে ওবায়দুল কাদের একই ধরনের কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঈদযাত্রায় সাধারণ মানুষ রাস্তায় যেন কোনো অবস্থাতেই দুর্ভোগের শিকার না হন, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নিজে খোঁজ রাখছেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের দিকে সবসময় যে সমস্যা হয়, আমরা সেটা এবার ওভারকাম করেছি। সেখানে নলকা ছিল দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা। আমরা নলকা সেতু করেছি। কাজেই সেখানে কোনো সংকট হবে বলে আমার মনে হয় না।’

গাজীপুর সড়কেও কোনো সমস্যা হবে না মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গাজীপুরে তিনটা উড়ালসড়ক খুলে দিয়েছি। সেখানে আর সমস্যা হবে না। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার সড়ক ভালো আছে।’

এদিকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জরুরি ভিত্তিতে ভাড়া-নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে পরিবহন মালিক-শ্রমিক, চাঁদাবাজরা ৮ হাজার কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে।

তিনি বলেন, এবারের ঈদে গণপরিবহন সংকটকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু মালিক ও পরিবহন চাঁদাবাজদের নেতৃত্বে ভাড়া-নৈরাজ্যের এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করেও ভাড়া-নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারছে না।

এবারের ঈদে ২৫ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সব পথে প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রী হতে পারে উল্লেখ করে তিনি জানান, ৪০ কোটি ট্রিপ সড়কপথে, ২০ কোটি ট্রিপ রেল, নৌ ও আকাশপথে যাতায়াত হতে পারে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ২৫ এপ্রিলের পর থেকে শহরাঞ্চলে রিকশা ভাড়া ২০ ভাগ বেড়েছে। আরও বাড়তে পারে।

গত দুই বছর করোনার বিধিনিষেধ থাকায় প্রিয়জনের সঙ্গে হয়নি ঈদ উদ্‌যাপন। এবার তাই উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে গ্রামের বাড়ি ছুটছে লাখো মানুষ। ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ বাড়ায় পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া ঘাটে দীর্ঘ অপেক্ষায় অসংখ্য যানবাহন। এতে ভোগান্তি বাড়লেও ঈদযাত্রার নানা ঝক্কি পেরিয়ে কষ্ট শেষে হাসির অপেক্ষায় তারা। এ ছাড়াও ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে মহাসড়কে।

Loading