ইউরোপে পালাচ্ছে বাংলাদেশিরা

প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ , আগস্ট ১৩, ২০২১
ফাইল ছবি

ইউরোপে অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে অন্যান্য সবদেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। মূলত উন্নত জীবনের আশায় যে যেভাবে পারছে সেভাবে ঢোকার চেষ্টা করছে ইউরোপের দেশগুলোতে। অনেকটা যেন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাইছে এই অনুপ্রবেশকারীরা। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটেনের জাতীয় দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ।

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়- আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলোর নাগরিকদের পাশাপাশি প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশিও ইউরোপে অনুপ্রবেশ করছেন। পূর্ব ইউরোপের গভীর অরণ্য, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে উন্নত দেশগুলোতে প্রবেশের এই যাত্রায় মারাও যাচ্ছেন তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ।

ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে ইউরোপে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ইতালিতে প্রবেশের জন্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়েছেন ৩ হাজার ৩০০ জনের বেশি বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে যাত্রাপথে সাগরে ডুবে মারা গেছেন ১ হাজারের বেশি।

ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে প্রতিবছর যত মানুষ ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করছেন, গত প্রায় ছয় বছর ধরে তাদের মধ্যে শীর্ষে আছেন বাংলাদেশিরা। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে যদিও অন্যান্য বছরের তুলনায় ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের সংখ্যা বিগত বছরগুলোর চেয়ে কম ছিল, কিন্তু তারপরও যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান, সিরিয়া ও উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়া ও মরক্কোর তুলনায় গত বছর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম, প্রতিবছরই জিডিপি বাড়ছে। এমনকি করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ সালে প্রতিবেশী দেশ ভারতের জিডিপি যেখানে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হওয়ার শঙ্কা আছে; সেখানে বাংলাদেশের জিডিপি বাড়ার সম্ভাবনা আছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। তাহলে কেন প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়াচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।

ইউরোপে বসবাস করা মানেই উন্নত জীবন, বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন একটি ধারণা বদ্ধমূল থাকাকে প্রতি বছর ইউরোপে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বৃদ্ধির প্রধান কারণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে যারা অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের জন্য রওয়ানা হন, তাদের অধিকাংশের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এবং তাদের একটি বিপুল অংশ লিবিয়া থেকে নৌপথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

Loading