সরকারের অনিয়মকে স্পষ্ট করে বলুন

প্রকাশিত: ৪:৩১ অপরাহ্ণ , আগস্ট ৭, ২০২১

চট্টগ্রামের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে করোনাসহ সব ধরনের চিকিৎসার জন্য শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ক্যাব। শনিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়

“চিকিৎসা সেবা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার, কারো দয়া নয়” পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে করোনা রোগীদের বাঁচার হাহাকার। এই হাহাকার শুধু মাত্র জীবন বাঁচানোর, চিকিৎসা সেবা পাবার অধিকারের হাহাকার। চট্টগ্রাম দেশের বানিজ্যিক রাজধানী ও বৃহত্তম শিল্প-বন্দর নগরী হলেও আধুনিক সরকারি-বেসরকারী কোন চিকিৎসা সেবা গড়ে উঠেনি। ফলে করোনা মহামারী কালে হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত আইসিএইউ-এইচডিইউ সুবিধা গড়ে উঠেনি, অক্সিজেন সরবরাহ ও শয্যা সংকট প্রকট। বিগতঅন্ধকারে ঢিল না ছুঁড়ে সরকার কোথায় কী অনিয়ম করছে বিএনপিকে তা স্পষ্ট করে বলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সবকিছুতে ষড়যন্ত্র খোঁজা বিএনপির স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যে রূপ নিয়েছে। জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতার কথা ভুলে তারা এখন সরকারের প্রতি অসত্যের প্রলাপ খুঁজে বের করছে।

আজ শনিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল এডুকেশন দর্শন বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা এবং দুঃস্থদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালেও বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি একটাই- তা হচ্ছে পালাক্রমে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার আর মিথ্যাচার করা। বিএনপির কৌশল হলো মায়াকান্না আর লিপসার্ভিস।

‘সরকার ষড়যন্ত্র করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পিছিয়ে দিচ্ছে’- মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যকে ‘হাস্যকর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে আখ্যা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিএনপি এর আগেও ভ্যাকসিন নিয়েও ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজেছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন বাঁচাতেই সরকার করোনার এই সংকটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে, তাদের জীবন যদি না থাকে তাহলে শিক্ষিত হয়ে কী হবে? তাই আগে জীবন বাঁচাতেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আইডিইবি’র সভাপতি প্রকৌশলী এ কে এম হামিদের সভাপতিত্বে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারি ইনস্টিটিউটে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান প্রমুখ। কয়েকদিন ধরেই দেশের সর্বোচ্চ মৃত্যু চট্টগ্রামে মৃত্যুপুরিতে পরিণত হলেও পর্যাপ্ত শয্যা সংকটে রোগীরা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছে। ফলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মরছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য বিভাগসহ কারও কাছে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের খালি শয্যার কোন প্রকৃত তথ্য না থাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। আবার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগীদের ভোগান্তি নিরসনে বিভাগীয় কমিশনার অফিস কর্তৃক গঠিত তদারকি কমিটিও কার্যকর নাই। তাই পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে শুরু হয়েছে শুধু নিঃশ্বাস নেবার অভিপ্রায়। এই অবস্থায় চট্টগ্রামের সকল সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিকে করোনাসহ সাধারণ রোগী ভর্তি করতে দ্রুত শয্যা সংখ্যা বাড়ানো ও করোনাসহ সকল প্রকার রোগের চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা ও বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু বন্ধের জন্য মানবিক আবেদন জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ।

সরকারি-বেসরকারী হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধির সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক ডাঃ মেজবাহ উদ্দীন তুহিন, তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন প্রতিদিন করোনায় মৃত্যুেত সর্বোচ্চ চট্টগ্রাম বিভাগ, তারপরও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলি শয্যা ও আনুসাংগিক সুবিধা না বাড়িয়ে মানুষকে মৃত্যুরদিকে ঠেলে দিচ্ছে। আবার বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর নির্ভরশীল। আবার অনেক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক একদিকে সরকারি চিকিৎসক অন্যদিকে বেসরকারি ক্লিনিকের মালিক। কিছু চিকিৎসকের দ্বৈত ভূমিকার কারণে মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পায় না, আবার বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়েও সেখানেও জিম্মি।

Loading