ইউএফও নিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গোপন রিপোর্টে যা আছে নিউজ ৭১ অনলাইন নিউজ ৭১ অনলাইন প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ , জুন ২৫, ২০২১ আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্টস (ইউএফও) হলো অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু। পৃথিবীর নানা প্রান্তে বিভিন্ন সময় আকাশে এগুলোকে উড়তে দেখা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। বিচিত্র আকারের নভোযানের মত দেখতে এগুলো, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে উড়ে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়। বৈমানিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বহু জন এই রহস্যময় উড়ন্ত যান দেখার দাবি করেছেন, কিন্তু অনেকেই তাদের বর্ণনা বিশ্বাস করেন না। এগুলো নিয়ে সিনেমা-টিভি ধারাবাহিক হয়েছে, কিন্তু এর রহস্যভেদ আজও হয়নি। অনেকের ধারণা, এগুলো গোপন কোন সামরিক বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন, আবার কেউ বলেন এগুলো ভিনগ্রহ থেকে আসা বুদ্ধিমান প্রাণীদের নভোযান। আসলে এগুলো যে ঠিক কি – তা কেউই জানে না। অন্তত এখন পর্যন্ত। তবে এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করতে যাচ্ছে মার্কিন সরকার, জুন মাস শেষ হবার আগেই। এ রিপোর্টটি এতদিন ক্লাসিফায়েড অর্থাৎ অতি গোপনীয় অবস্থায় ছিল। কিন্তু মার্কিন সামরিক বাহিনীর ভেতর থেকেই আকাশে ইউএফও দেখতে পাবার এত অসংখ্য রিপোর্ট এসেছে যে মার্কিন কংগ্রেস এই রিপোর্টটি চেয়ে পাঠিয়েছে। অনেকে বলছেন, ইউএফওগুলো যে অন্য কোন গ্রহ থেকে এসেছে এমন মতবাদের পক্ষে নিশ্চিত প্রমাণ খুবই কম। সামরিক নেতারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এসব ইউএফওর যে প্রযুক্তি তা যদি অন্য কোন গ্রহের প্রাণীদের না-ও হয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের বৈরি কোন দেশ – যেমন রাশিয়া বা চীনেরও হতে পারে। রিপোর্টটি সম্পর্কে আমরা যা জানি : গত বছরের আগস্ট মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর বা পেন্টাগন একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে – যার উদ্দেশ্য ছিল অজানা উড়ন্ত বস্তু দেখতে পাবার বিবরণগুলো পরীক্ষা করে দেখা। এর নাম ছিল আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা টাস্ক ফোর্স। এর দায়িত্ব ছিল এসব ঘটনা চিহ্নিত করা, বিশ্লেষণ ও তালিকাভুক্ত করা। তা ছাড়া ইউএফও’র প্রকৃতি এবং উৎস সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করা। রিপোর্টটিতে গত দুই দশকের ১২০টি ইউএফও সংক্রান্ত ঘটনাকে বিশ্লেষণ করা হয়। এর মধ্যে ছিল তিনটি ভিডিও যা গত বছর পেন্টাগন ডি-ক্লাসিফাই করে অর্থাৎ আগে গোপন রাখা হয়েছিল এমন অবস্থা থেকে জনসমক্ষে প্রকাশ করে। এই রিপোর্টের একটি গোপন সংস্করণ জুন মাসের প্রথম দিকে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের হাতে দেয়া হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে কিছু নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেছেন, রিপোর্টে বলা হয়েছে যে- ভিনগ্রহের মানুষের কর্মকাণ্ডের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে এমন সম্ভাবনা বাতিল করেও দেয়া হয়নি। এতে এও বলা হয়েছে যে- ইউএফওগুলো কোনো গোপন মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি নয়। কিন্তু তাহলে এই ‘অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তুগুলো’ ঠিক কী- তা নিয়েও কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি ওই রিপোর্টটি। ইউএফও’র ব্যাপারে যেসব তথ্য প্রমাণ আছে : বেশ কিছু মার্কিন সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইউএফও দেখার ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য বর্ণনাগুলো এসেছে পাইলটদের কাছ থেকে। সামরিক অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাছাকাছি ইউএফও উড়ছে – এ দৃশ্য তারা ককপিট থেকেই দেখতে পেয়েছেন। মার্চ মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরিচালক জন র্যা টক্লিফ ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, খবরে যতটুকু প্রকাশ করা হয় তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক ইউএফও দেখা গেছে। আমরা এমন সব বস্তুর কথা বলছি, যা নৌবাহিনী বা বিমানবাহিনীর পাইলটরা দেখেছে, অথবা যা উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে। এগুলো এমন কাজ করে যা ব্যাখ্যা করা কঠিন। এগুলো এমনভাবে চলাচল করে যা (উড়ন্ত বস্তুর পক্ষে) খুবই কঠিন, যেভাবে চলার মত প্রযুক্তি আমাদের নেই। এরা শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে চলছে কিন্তু ‘সনিক বুমে’র মত কোনো শব্দ হচ্ছে না। গত মাসে সিবিএস নিউজের সিক্সটি মিনিটস অনুষ্ঠানে সাবেক দুজন নৌবাহিনীর পাইলট বর্ণনা করেন প্রশান্ত মহাসাগরের আকাশে একটি ইউএফও দেখার কথা। একজন পাইলট বর্ণনা করেন, জিনিসটা দেখতে ছিল মিন্ট বা টিক-ট্যাকের মত সাদা রঙের ছোট একটা বস্তু। সাবেক নেভি পাইলট এ্যালেক্স ডিয়েট্রিখ বিবিসিকে বলেন, জিনিসটা ঠিক টিক-ট্যাকের মতই দেখতে, কিন্তু এটা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কিন্তু পাগলের মত এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না- এটা কোনদিকে যাবে, কী করবে, অথবা কী পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে জিনিসটা এমনভাবে উড়তে পারছে। এর কোনো ধোঁয়া ছিল না বা একে পরিচালনার জন্য কোন ইঞ্জিনও দেখা যাচ্ছিল না। এটা যেভাবে বাঁক নিচ্ছিল, সেভাবে চলতে হলে যে ফ্লাইট কন্ট্রোল দরকার, সেরকম কিছুও ছিল না। সূত্র : বিবিসি শেয়ার আন্তর্জাতিক বিষয়: